পাওনা টাকা ফেরত চাওয়াই কাল হলো বিকাশ ব্যবসায়ী বিজয়ের

ব্যবসায়িক সুসম্পর্কের খাতিরে নিজের প্রতিবেশী ব্যবসায়ী আব্দুর রহমানের কাছে বিকাশ ব্যবসায়ী বিজয় কুমার বিশ্বাস মাসিক সাত হাজার টাকা লাভে দেড় লাখ টাকা লগ্নি করেছিলেন। আর সেই টাকা ফেরত চাওয়ায় আব্দুর রহমানের হাতে খুন হন বিজয় কুমার বিশ্বাস। গত ১৪ অক্টোবর রাতে বিজয়ের গলায় ইন্টারনেটে তার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেন আব্দুর রহমান। পরে লাশ গুম করার জন্য নিজের দোকান কর্মচারী নাসির উদ্দিনের সহযোগিতায় পাহাড়তলী থানা এলাকার আলিফ গলিতে বস্তাবন্দি বিজয়ের লাশ ফেলে দিয়ে আসেন আব্দুর রহমান ও নাসির উদ্দিন।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থার (সিআইডি) হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর শনিবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার জাহানের আদালতে ব্যবসায়ী বিজয় কুমার বিশ্বাস হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিলেন আব্দুর রহমান।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, খুন হওয়া ব্যবসায়ী বিজয় কুমার বিশ্বাস ইপিজেড থানা এলাকার নেভী ওয়েল ফেয়ার মার্কেটে চাঁদনী এন্টারপ্রাইজ ও গিফট শপ নামে একটি দোকান পরিচালনা করতেন। হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা আব্দুর রহমান একই মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় মের্সাস রাইড এন্টারপ্রাইজ ও হাওলাদার এন্টারপ্রাইজ নামে দুটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেন। ব্যবসায়িক সম্পর্কের খাতিরে মাসিক সাত হাজার টাকা লাভে আব্দুর রহমান দেড় লাখ টাকা ঋণ সহযোগিতা নেন বিজয় কুমার থেকে।

আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে উঠে আসে, আব্দুর রহমান কয়েক মাস মুনাফার টাকা না দেয়ায় বিজয় মুনাফাসহ আসল টাকা ফেরত দেয়ার জন্যে তাগাদা দেন। তাগাদা পেয়ে টাকা না দিয়ে উল্টো আব্দুর রহমান বিজয়কে খুন করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আব্দুর রহমান তার পাওনাদার বিজয়কে কৌশলে নিজ প্রতিষ্ঠানে ডেকে নিয়ে গলায় ইন্টারনেটের তার পেঁচিয়ে খুন করে। খুনের পর লাশ গুম করতে বস্তায় ভরে পাহাড়তলী থানা এলাকার আলিফ গলিতে ফেলে যায়।

এই খুনে সহায়তা করার নাসির উদ্দিনকেও আসামি করা হয়েছে এবং তাকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমান।

প্রসঙ্গত, গত ১৫ অক্টোবর পাহাড়তলী থানার আলিফ হোটেল সংলগ্ন গলি থেকে বিজয় বিশ্বাসের বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার করে পাহাড়তলী থানা পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত বিজয় কুমার বিশ্বাসের ভাই বাদী হয়ে পাহাড়তলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

লাশ উদ্ধারের ঘটনার পর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঘটনাস্থল থেকে প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহে করে ঘটনার রহস্য উদঘাটনে ছায়া তদন্তে নামে। তদন্তে নেমে ১০ দিনের মাথায় তারা খুনিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করতে সক্ষম হন।

খুনের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার পর আদালত আব্দুর রহমানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এফএম/এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!