দখলবাজি/ ফুটপাত থাকলেও মানুষ হাঁটার পথ নেই
রাস্তার পাশে ফুটপাত থাকলেও মানুষ হাঁটতে পারে না সেই ফুটপাত দিয়ে। হাঁটতে হয় রাস্তায় চলমান গাড়ির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় লক্ষ করলে দেখা যায় ফুটপাত দখলে চলে গেছে ব্যবসায়ীদের হাতে।
চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজারের কাঁচাবাজার এলাকা থেকে শুরু করে বাকলিয়ার পুলিশ বিট এলাকা পর্যন্ত সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ফুটপাত আছে কিন্তু সেটাও বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ ব্যাবসায়ীর দখলে। যেখানে ফুটপাত নেই সেখানের রাস্তার দুই পাশের অংশ জুড়েও থাকে দোকানের বিভিন্ন জিনিসপত্র, ময়লা ও আবর্জনা।
রাস্তা ও ফুটপাত দখল করা যেন ব্যবসায়ীদের জন্য সাধারণ একটা বিষয়। চকবাজার কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে বাকলিয়ার পুলিশ বিট এলাকা পর্যন্ত ফুটপাত ব্যবহার হচ্ছে দোকানিদের জিনিসপত্র রাখার জায়গা হিসেবে কেউ আবার কাঁচা শাকসবজি ও মাছের দোকান খুলে রেখেছে সেই ফুটপাতের ওপর। কোথাও আবার দেখা যায় সিটি কর্পোরেশন ড্রেনের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে তাও স্তূপ করে রাখা হচ্ছে সেই ফুটপাতের ওপরই। কোথাও কোথাও আবার বিভিন্ন নির্মাণাধীন স্থাপনার বালু ও পাথর রাখা হয় রাস্তার পাশে। এসব কারণে দুই-এক মাস আগে রাস্তা প্রসারিত করলেও কমছে না যানজট। রাহাত্তরপুল থেকে চকবাজার আসতে ৫ মিনিটের জায়গায় সময় লাগে ২০ থেকে ৩০ মিনিট।
পথচারী মো. হামিদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, ‘আমার বাসা বড় মিঞা মসজিদ। প্রতিদিন এই পথ দিয়ে চকবাজার যাই। কিন্তু এই পথে হাঁটতে খুবই কষ্ট। রাস্তার পাশে ফুটপাতগুলো বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের দখলেই। হাঁটতে হয় রাস্তা দিয়ে। কিছুদিন আগে রাস্তা বড় করলেও ফুটপাত থেকে এসব দোকানপাট তুলে না দেওয়ার কারণে সমস্যার কোনো সমাধান হচ্ছে না। রাস্তায় হাঁটলেও গাড়িচালকরাও ধীরগতিতে থাকেন না। যার জন্য মানুষ নানা দুর্ঘটনার শিকারও হচ্ছে।’
আফসানা আক্তার চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, ‘আমি আমার বাচ্চাকে এই পথ দিয়ে রোজ স্কুলে আনা নেওয়া করি যা এই পথে খুব কষ্টকর। কারণ রাস্তার দুই পাশে নিরাপদে হাঁটার জায়গা নেই। ফুটপাতগুলো তো বাজার আর ময়লা-আবর্জনাতে ভরে থাকে। আবার কোথাও তো ফুটপাতও নেই। অথচ এই রাস্তাটা নগরীর একটা ব্যস্ততম রাস্তা। আর যেখানে হাঁটাচলা করি সেখানে অসংখ্য গাড়ি, রিক্সা-এসব। অনেক সময় কত ধাক্কা খাচ্ছি গাড়ির সাথে, মানুষের সাথে। গাড়িতে গেলে ৫ মিনিটের পথ যেতে সময় লাগে ২০, ২৫ মিনিট।
ফুটপাত দখল নিয়ে চকবাজার ফুলতলা এলাকায় বিভিন্ন দোকানিদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, এখানে প্রশাসনকে টাকা দিয়েই বসি। তাদের অনুমতি না পেলে কেমনে বসবো? তাছাড়া আমাদের বেচাকেনাতে মানুষেরই তো সুবিধা।
এ নিয়ে চট্টগ্রামের ট্রাফিক পুলিশ সার্জন হারুনুর রশীদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা শীঘ্রই অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা করবো।’
ফুটপাতে ময়লা আবর্জনা জমানো প্রসঙ্গে চট্টগ্রামের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কাজী শফিকুল মান্নান সিদ্দিকী বলেন, ‘বিষয়টা খুব দ্রুত দেখছি এবং যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নিচ্ছি।’