প্রধানমন্ত্রীর কাছে ৩০ হাজার নারী পুলিশ চাইলেন সিএমপির আমেনা বেগম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পুলিশ বাহিনীতে নারী সদস্যের সংখ্যা বাড়িয়ে ৩০ হাজারে উন্নীত করার আবেদন জানালেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার আমেনা বেগম।

পুলিশ সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনে সোমবার (৬ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠকে তিনি এই প্রস্তাব দেন। আমেনা বেগম এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পুলিশ প্রশিক্ষণ কমপ্লেক্সের দ্রুত বাস্তবায়ন করে আন্তর্জাতিক মানের করার প্রস্তাবও দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এই সঙ্গে নারী পুলিশের আলাদা দু’টি পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার (পিটিসি) করারও দাবি জানান এই নারী কর্মকর্তা। ট্রেনিং সেন্টার করার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রধানমন্ত্রী সম্মতি প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে।

ওই বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন এবং আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বক্তব্য রাখেন।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাবনায় সিএমপির এই অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, পুলিশ বাহিনীতে বর্তমানে নারী সদস্যের সংখ্যা ১৫ হাজার। এই সংখ্যা বাড়িয়ে ৩০ হাজারে উন্নীত করার আবেদন জানান তিনি।

ওই বৈঠকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম তার প্রস্তাবনায় বলেন, পুলিশের উচ্চ পদগুলোতে সমন্বয় করতে নতুন পদ সৃষ্টি করতে হবে। এ জন্য তিনি এসপি থেকে গ্রেড-১ পদ পর্যন্ত ৬৭৮টি নতুন পদ সৃষ্টির প্রস্তাব দেন। গ্রেড-১ পদে বর্তমানে আইজিপিসহ ৫ জন কর্মকর্তা রয়েছেন। বাকি চারজন অতিরিক্ত আইজিপি। কিন্তু চেয়ার আছে দু’টি। একটি আইজিপির। আরেকটি অতিরিক্ত আইজিপির (প্রশাসন)।

শফিকুল ইসলামের প্রস্তাবনায় ১৩৩টি এসপি পদ, ১৮৪টি অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদ, ৭১টি ডিআইজি পদ, ১৭টি অ্যাডিশনাল আইজি পদ এবং ৮টি গ্রেড-১ পদের কথা রয়েছে।

ডিএমপি কমিশনার প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলেন, বর্তমানে ২৯ বছর লাগে এডিশনাল আইজিপি হতে। ২৪ বছর লাগে ডিআইজি ও ১২ বছর লাগে এসপি হতে। তিনি বলেন, নিচের দিকের পদের তুলনায় ওপরের দিকে পদের সংখ্যা কম। একারণে পদোন্নতিতে সমস্যা হয়। এছাড়া গত বছর ৫টি গ্রেড-১ পদ সৃষ্টি করা হলেও মাত্র দুটি পদ স্থায়ী করা হয়েছে। বাকি ৩টি গ্রেড-১ পদ দেওয়া হয়েছে ব্যক্তিগতভাবে।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরা প্রস্তাবে ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোতে পুলিশ কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়টি উত্থাপন করেন। এছাড়াও দুর্নীতি দমন কমিশন, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) ও বিআইডব্লিউটিএতে পদায়নের দাবিও তোলে তিনি।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিআরটিএ, বিআইডব্লিউটিএ এবং মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরে পুলিশ সদস্যদের প্রতিনিধি থাকা প্রয়োজন। এ বিষয়ে সরকার উদ্যোগ নেবে। এরইমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পুলিশ সদস্যদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের গ্রেফতারের কোনও এখতিয়ার নাই। গ্রেফতারের জন্য তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেরই বলতে হবে। তারা নির্দেশ দিতে পারে। কিন্তু তারা ধরে রেখে ওখানে হাজতখানা বানাবে, হাজতে রাখবে এটা কিন্তু দুর্নীতি দমন কমিশনের কাজ নয়। তিনি বলেন, যার যার কাজ তার তার করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশে কিন্তু মেধাবীরাই আসে। ব্যারিস্টার, ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ারও আসে। কিন্তু আমি মনে করি পুলিশের জন্য একটি পৃথক মেডিক্যাল ইউনিট গঠন করা প্রয়োজন। কাজেই আপনারা যদি আলাদা একটা ইউনিট করে ফেলেন ডাক্তারদের জন্য, তাহলে আপনাদের চিকিৎসারই একটা সুবিধা হবে। এই পৃথক ইউনিটের দাবি কিন্তু আপনারা করেননি, আমি আপনাদের পক্ষ থেকেই দাবিটা করলাম।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!