স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে ‘হত্যা’র অভিযোগ উঠেছে। রোববার (১৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে আটটার দিকে চট্টগ্রামের পটিয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ নিয়ে এসে ওই গৃহবধূর বাবার বাড়িতে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে সন্ধ্যায়। নিহত গৃহবধূর নাম রানী আকতার (২০)। তিনি পটিয়া উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নের উত্তর শ্রীমাই এলাকার ১ নং ওয়াডের নুরুজ্জামান হাওলাদারের মেয়ে।
নিহত গৃহবধূর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৯ নভেম্বর একই উপজেলার ভাটিখাইন ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের কামাল ফকির বাড়ির নবী হোসেনের ছেলে শহিদুল ইসলামের সাথে সামাজিকভাবে বিয়ে হয়। নবী হোসেনের দুই সংসারের মধ্যে শহিদুল ইসলাম দ্বিতীয় সংসারের ছেলে। তাদের এ সংসারে বসতভিটা না থাকায় বিয়ের সময় দুই লাখ টাকা যৌতুক নিয়ে এ বিয়ে সম্পন্ন হয় বলে জানান নিহত গৃহবধূর পিতা নুরুজ্জামান হাওলাদার।
জানা গেছে, বিয়ের সময় নগদ এক লাখ ৭০ হাজার টাকা কোনোভাবে জোগাড় করে দিলেও বাকি ৩০ হাজার টাকা দিনমজুর বাবা দিতে পারেননি। এ নিয়ে স্বামী ও তার শাশুড়ি প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। বেশ কয়েকবার সালিশও হয়েছে।
নিহত গৃহবধূ স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির অন্যদের সঙ্গে পটিয়ার ভাটিখাইন ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের আবুল হোসেনের বাসায় ভাড়া থাকতেন। তার স্বামী টমটমচালক। স্ত্রী ‘হত্যা’র এই ঘটনায় স্বামী শহিদুল ইসলামকে আটক করেছে পটিয়া থানা পুলিশ। তবে ঘটনার পর থেকে শাশুড়ি ও তার পরিবারের অন্য সদস্যরা পলাতক রয়েছেন।
নিহত গৃহবধূর বড় ভাই বেলাল হোসেন জানান, ‘যৌতুকের জন্য প্রায় সময় তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগে থাকত। এরই জের ধরে রোববার (১৩ নভেম্বর) সকালে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন আমার ছোট বোনকে নির্যাতন করে মেরে ফেলে। মৃত অবস্থায় পটিয়া হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসকরা জানান, তাকে মেরে ফেলে হাসপাতালে আনা হয়েছে। কৌশলে লাশ ফেলে শাশুড়ি শেলী আকতার পালিয়ে গেলেও স্বামী শহিদুল ইসলামকে আটক করা হয়।’
এ ব্যাপারে পটিয়া থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক রিয়াজ জানান, ‘নিহতের গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সিপি