নিরাপত্তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মৌলভী সৈয়দ পরিবারের আকুতি

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রথম প্রতিবাদকারী, চট্টগ্রাম গেরিলা বাহিনীর কমান্ডার এবং চট্টগ্রাম যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মৌলভী সৈয়দ আহমদের পরিবার নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুতি জানিয়েছেন।

তার বড় ভাই ডা. আলী আশরাফের মৃত্যু পরবর্তী গার্ড অব অনার না দেওয়ার প্রতিবাদ করায় বাঁশখালী সংসদ সদস্যের রোষানলে পড়ে হামলা, মামলা ও হুমকি শিকার হয়েছেন এ পরিবার। সাংসদের মদদে অব্যাহত হুমকি ও নির্যাতন থেকে বাঁচতে তাকে দলীয় পদ থেকে অপসারণের দাবি করেছেন তারা।

সোমবার (১৭ আগস্ট) চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে এ আকুতি জানান মৌলভী সৈয়দের পরিবার।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মৌলভী সৈয়দের বড় ভাই মুক্তিযোদ্ধা ডা. আলী আশরাফ গত ২৬ জুলাই মারা যাওয়ার পর যথা সময়ে বাঁশখালী উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়। পরের দিন ২৭ জুলাই সকাল ১১ টায় জানাজা সময় নির্ধারণ করে প্রশাসন। এর প্রেক্ষিতে জানাযার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ফোন করা হলে তিনি বারবার কেটে দেন। পুলিশ উপস্থিত থাকলেও ওইদিন দুপুর ১২টার মধ্যেও প্রশাসনের কেউ উপস্থিত না হলে ডা. আলী আশরাফের মরদেহ দাফন করা হয়। জানাজার প্রায় দেড় ঘন্টা পরে এসে ইউএনও, এসিল্যান্ড প্রতীকি গার্ড অব অনার দিতে জোর করলে স্থানীয় জনগণ ও মুক্তিযোদ্ধারা আপত্তি তোলে। পরে প্রশাসন কবরে ফুল দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেন। প্রশাসনের এমন ভূমিকা একজন মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে হতাশ করেছে যা অসম্মানের সামিল বলে উল্লেক করে পরিবার।

এতে বলা হয়, স্থানীয় এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর প্রত্যক্ষ মদদে গার্ড অব অনার দেয়নি প্রশাসন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ করে মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় জনতা। এতে এমপি ক্ষীপ্ত হয়ে মৌলভী সৈয়দের পরিবারকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও গণমাধ্যমে ডা. আলী আশরাফ মুক্তিযোদ্ধা নন কিংবা আওয়ামী লীগের কোন পদে নেই এবং বাঁশখালীতে মুক্তিযুদ্ধ হয়নি বলে বিরূপ মন্তব্য করেন। অথচ তিনি আমৃত্যু উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক ছিলেন এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা। এসব ঘটনায় সোচ্চার থাকায় মৌলভী সৈয়দের ভাতিজা সাংবাদিক ফারুক আবদুল্লাহ’র বিরুদ্ধে এমপির মৌখিক নির্দেশে (এজাহারে উল্লেখ রয়েছে) আইসিটি আইনে যড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়।
এছাড়া প্রতিনিয়ত এমপির অনুসারীরা প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এতে চরম নিরাপত্তহীনতায় ভোগছে এ পরিবার।

আরও উল্লেখ করা হয়, গত ৩ আগস্ট গার্ড অব অনার না দেওয়া, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার প্রতিবাদে বাঁশখালীর পুঁইছড়ি প্রেমবাজারে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিবাদ সমাবেশে এমপির নির্দেশে কতিপয় চিহ্নিত ডাকাতসহ ১৯ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা করে। হামলাকারীরা একাধিক মামলার আসামী বলে উল্লেখ করা হয়।

অবিলম্বে প্রশাসনের দুই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার এবং সংসদ সদস্যকে দলীয় পদ থেকে অপসারণের দাবি জানান মৌলভী সৈয়দের পরিবার। নয়তো এ পরিবার মুক্তিযোদ্ধার দুঃখ নিয়েই বেঁচে থাকবে। সমাজের কাছে বারেবারে হেয় হবে।

একইভাবে সোমবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের মাধ্যেমে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আরেকটি স্মারণলিপি প্রদান করেছে পরিবার। এর আগে রোববার চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এর কাছে এ বিষয়ে আরেকটি স্মারণলিপি দেওয়া হয়।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!