‘দিশেহারা চট্টগ্রাম’ করোনায় ৭ রোগীর মৃত্যু একদিনেই—শনাক্ত ৩০০

নগরীতে ৪৫ হাজার ছাড়াল শনাক্ত, উপজেলায় সাড়ে ১২ হাজার

করোনার ভয়ঙ্কর থাবায় দিশেহারা চট্টগ্রাম। একটানা পাঁচদিন দুইশর ওপরে থাকা করোনা শনাক্ত এবার লাফিয়ে পৌঁছে গেল তিনশর ঘরে। একই সময়ে মৃত্যু বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। একদিনেই ৭ জনের মৃত্যু নিয়ে ধুঁকছে চট্টগ্রাম। এদের মধ্যে ৬ জনই উপজেলার বাসিন্দা। অন্যদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ২২ শতাংশ হারে শনাক্ত ৩০০ জনের মধ্যে ২০৪ জন নগরের এবং ৯৬ জন উপজেলার বাসিন্দা।

এনিয়ে চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত মোট করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৫৭ হাজার ৬৭০ জন। শনাক্তদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর ৪৫ হাজার ১৩০ জন। আর বিভিন্ন উপজেলার ১২ হাজার ৫৪০ জন রয়েছেন। অন্যদিকে, করোনা আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত মোট ৬৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৪৬৮ জন চট্টগ্রাম নগরের, আর বিভিন্ন উপজেলায় মারা গেছেন ২১৩ জন।

রোববার (২৭ জুন) চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি সাতটি ও কক্সবাজারে একটি ল্যাবে এক হাজার ৩৬০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩০০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

এর মধ্যে চট্টগ্রামের প্রধান করোনা পরীক্ষাগার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) ৫৩৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে করোনা শনাক্ত হন দিনের সর্বোচ্চ ১০৪ জন। যাদের মধ্যে ৫৫ জন নগরের। বাকি ৪৯ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ২২৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ৪১ জনই নগরের, বাকি ২৫ জন উপজেলার।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ল্যাবে ২৭৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬৬ জনের দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৬০ জনই নগরের, বাকি ৬ জন বিভিন্ন উপজেলার।

এছাড়া, নগরীর বেসরকারি করোনার ল্যাবগুলোর মধ্যে শেভরণ ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ১৪২ জনের নমুনা পরীক্ষা নগরের ১২ জন ও উপজেলার ২ জনের দেহে করোনার জীবাণু পাওয়া যায়।

চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ২৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৮ জন করোনা রোগী পাওয়া যায়। এদের ৫ জন নগরের এবং ৩ জন উপজেলার।

এপিক হেলথ কেয়ার ল্যাবে ৭৫ নমুনা পরীক্ষায় ২৮ জন করোনা পজিটিভ হন। এদের মধ্যে ২৩ জন নগরের এবং বাকি ৫ জন উপজেলার বাসিন্দা।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরি (আরটিআরএল) ল্যাবে ২৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৩ জনের দেহে করোনা পজিটিভ এসেছে। এদের মধ্যে ৮ জন নগরের এবং ৫ জন বিভিন্ন উপজেলার।

এছাড়া, কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ৫২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে উপজেলার ১ জনের নমুনায় পজিটিভ পাওয়া যায়।

সরকারি ল্যাবগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাব ও চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার কোন নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি। বেসরকারি ল্যাবগুলোর মধ্যে ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ও মেডিকেল সেন্টার হাসপাতাল ল্যাবে করোনা নমুনা পরীক্ষা হয়নি।

উপজেলায় করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সীতাকুণ্ড উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ৩১ জন শনাক্ত হয়। এছাড়া মিরসরাইয়ে ২৫ জন, ফটিকছড়িতে ১১ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৬ জন, হাটহাজারীতে ৫ জন, লোহাগাড়ায় ৪ জন, পটিয়া ও রাউজানে ৩ জন করে, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীতে ২ জন করে এবং সাতকানিয়া, আনোয়ারা, চন্দনাইশ ও সন্দ্বীপে ১ জন করে শনাক্ত হয়েছেন।

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!