দক্ষিণ আফ্রিকাকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে ভারতের বিশ্বরেকর্ড

টানা ১১টি সিরিজ জিতলো ভারত

ভারতের গড়া ৬০১ রানের পাহাড় ডিঙানো দূরের কথা, পাহাড়ের পাদদেশে যেন মুখ থুবড়ে পড়লো দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং। প্রথম ইনিংসে ২৭৫ রানে অলআউট হওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে তারা অলআউট হয়ে যায় মাত্র ১৮৯ রানে। তাতে করে ভারত বড় ব্যবধানে জিতে ঘরের মাঠে টানা ১১টি সিরিজ জয়ের বিশ্বরেকর্ড গড়লো। যে রেকর্ড গড়তে পারেনি আর কেউ। টেস্টের তৃতীয় সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২৭৫ রানে অলআউট করে দেয়ার পরই নিশ্চিত হয়ে যায়, ফলোঅনে পড়েছে তারা। কিন্তু ভারত কি তাদেরকে ফলো অন করাবে কি না তা নিশ্চিত ছিল না। কিন্তু চতুর্থ দিন (১৩ অক্টোবর) সকালে যখন বিরাট কোহলি প্রোটিয়াদের ফলো অন করালেন, তখনই চিন্তা বাড়তে থাকে, তবে কি প্রোটিয়ারা ইনিংস ব্যবধানেই হারতে পারে?

শেষ পর্যন্ত সেটাই ঘটলো। পুনে টেস্টের চতুর্থ দিনেই দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতীয় পেসার আর স্পিনারদের সাঁড়াসি আক্রমণের মুখে দক্ষিণ আফ্রিকা অলআউট হয়ে গেলো মাত্র ১৮৯ রানে। ফলে স্বাগতিক ভারতের কাছে এক ইনিংস ও ১৩৭ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে প্রোটিয়ারা। ১ ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতে রীতিমত রেকর্ড গড়ে ফেলেছে ভারত।

পুরো সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারত ৫ উইকেট হারিয়ে ৬০১ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে। জবাব দিতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংসে অল-আউট হয়ে যায় মাত্র ২৭৫ রানে। প্রথম ইনিংসেই সফরকারীরা পিছিয়ে পড়ে ৩২৬ রানে। ফলো-অনে পড়ে চতুর্থদিন দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু স্বাগতিক বোলারদের সামনে প্রোটিয়াদের কোনো ব্যাটসম্যানই সঠিকভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারলো না। আজ শেষ বিকেলে চা বিরতির কিছুক্ষণ পরই দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮৯ রানে অল-আউট হয়ে যায়।

প্রোটিয়াদের হয়ে লড়াই করার কিছুটা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ওপেনার ডিন এলগার, মিডল অর্ডারে টেম্বা বাভুমা এবং শেষ দিকে ভারনন ফিল্যান্ডার। কিন্তু এলগারের ৪৮, বাভুমার ৩৮ এবং ফিল্যান্ডারের ৩৭ রান কোনোই কাজে আসেনি ভারতীয় বোলারদের চাপের মুখে। এ তিনজনছাড়া প্রোটিয়াদের আর একজন মাত্র দুই অংকের ঘর স্পর্শ করতে পেরেছিল। কেশব মাহারাজ। তিনি করেছিলেন ২২ রান। এছাড়া সবাই আউট হয়েছেন দুই অংকের নিচে।

চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনে ৭৪ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট তুলে নিয়েছিল ভারত। চা বিরতির সময় প্রোটিয়ারা দাঁড়িয়েছিল ৭ উইকেটে ১৭২ রানে। শেষ সেশনে ম্যাচ স্থায়ী হয় মাত্র ৩৮ বল। এর মধ্যেই প্রয়োজনীয় তিন উইকেট তুলে নেয় ভারতীয়রা। ভারতের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে উমেশ যাদব ও রবীন্দ্র জাদেজা ৩টি করে উইকেট দখল করেন। এছাড়া ২টি উইকেট নেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ১টি করে উইকেট নেন ইশান্ত শর্মা ও মোহাদ শামি। রোহিত শর্মা ২ ওভার ও বিরাট কোহলি ১ ওভার বল করেন। তবে তারা কোনো উইকেট পাননি।

এই জয়ের সুবাদে ভারত এক ম্যাচ বাকি থাকতেই তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে নেয় এবং ২০০ পয়েন্ট নিয়ে আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ টেবিলের শীর্ষস্থান মজবুত করে নিলো। একই সঙ্গে ভারত নিজেদের মাঠে একটানা ১১টি টেস্ট সিরিজ জয়ের বিশ্বরেকর্ড গড়লো।

বিরাট কোহলিরা ভেঙে দিল ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার টানা ১০টি টেস্ট সিরিজ জয়ের রেকর্ড। ১৯৯৪ থেকে ২০০১ পর্যন্ত এবং ২০০৪ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত সময়ে অস্ট্রেলিয়া মোট দু’বার ঘরের মাঠে টানা ১০টি করে টেস্ট সিরিজ জয় করেছিল। ভারত ২০১২-১৩ মৌসুমের পর ঘরের মাঠে কোনও টেস্ট সিরিজ হারেনি।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!