ঢাকাগামী তিন ট্রেন বসে আছে চট্টগ্রামে, যাত্রীদের চরম ভোগান্তি

রেললাইন বেঁকে গিয়ে কুমিল্লায় ট্রেন দুর্ঘটনার পর চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তিনটি ট্রেন বেলা তিনটা থেকে যাত্রী নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের বিভিন্ন প্লাটফর্মে। ময়মনসিংহগামী অপর একটি ট্রেনেরও একই অবস্থা।

রেললাইন বেঁকে গিয়ে চট্টগ্রাম থেকে যাওয়া জামালপুরগামী ‘বিজয় এক্সপ্রেস’ ট্রেনের ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়।
রেললাইন বেঁকে গিয়ে চট্টগ্রাম থেকে যাওয়া জামালপুরগামী ‘বিজয় এক্সপ্রেস’ ট্রেনের ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়।

জানা গেছে, ‘মহানগর গোধূলী’ বেলা ৩টায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাওয়ার কথা ছিল। কক্সবাজার থেকে আসা ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ চট্টগ্রাম রেলস্টেশন হয়ে ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল বিকেল ৪টায়। অন্যদিকে বিকেল পৌনে ৫টায় ‘সোনার বাংলা এক্সপ্রেস’ও ঢাকার উদ্দেশ্যে ছাড়ার সময় নির্ধারিত ছিল। এছাড়া বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে ‘ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস’ চট্টগ্রাম থেকে ছাড়ার কথা ছিল।

এই চারটি ট্রেনই শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের বিভিন্ন প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে ছিল যাত্রী নিয়ে। এতে বিপুলসংখ্যক যাত্রী দুর্ভোগে পড়েন।

ট্রেনগুলো কখন ঢাকা ও ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে রওনা হবে— এ নিয়ে কর্মকর্তারা সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছেন না। তবে কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, রাত ৮টা বা ৯টার পর চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে পারে। কুমিল্লায় দুর্ঘটনার খবর পেয়ে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ও আখাউড়া থেকে দুটি উদ্ধারকারী ট্রেন হাসানপুর রেলওয়ে স্টেশনের ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দিয়েছে।

এদিকে ঢাকা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টায় চট্টগ্রাম অভিমুখী সুবর্ণ এক্সপ্রেস ছেড়ে গেছে। তবে সেই ট্রেন চট্টগ্রামে আসতে দেরি হতে পারে বলে জানা গেছে।

রোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১টা ৪৩ মিনিটে রেললাইন বেঁকে গিয়ে চট্টগ্রাম থেকে যাওয়া জামালপুরগামী ‘বিজয় এক্সপ্রেস’ ট্রেনের ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার হাসানপুর রেলওয়ে স্টেশনের অদূরে তেজেরবাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ট্রেনটির কমপক্ষে ৩০ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা গুরুতর। আহতদের অনেকেই স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়ে সড়কপথে যার যার গন্তব্যে চলে গেছেন বলে স্থানীয়রা জানান।

যাত্রীরা জানান, চট্টগ্রাম থেকে যাওয়া ‘বিজয় এক্সপ্রেস’ ট্রেনটির বগিগুলো হঠাৎ করে একে একে কাত হয়ে পড়ে যেতে থাকে। চলন্ত ট্রেনটি একপর্যায়ে থেমে যায়। যাত্রীরা তখন আতঙ্কে চিৎকার করতে থাকেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, প্রচণ্ড গরমের কারণে রেললাইন বাঁকা হয়ে যেতে পারে। এমন ঘটনায় ট্রেন লাইনচ্যূত হয়ে পড়ে। যদিও কর্মকর্তাদের কেউ কেউ বলছেন, ট্রেনের ইঞ্জিনের সঙ্গে থাকা লক ভেঙেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।

এদিকে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনার পর রোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমানকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটির কমিটির সদস্যরা হলেন—চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ আবদুল হানিফ, সংকেত ও টেলিযোগাযোগ কর্মকর্তা জাহেদ আরেফীন পাটোয়ারী, চট্টগ্রাম বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (লোকো) সাজিদ হাসান এবং বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ক্যারেজ ও ওয়াগন) সজীব হাসনাত।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!