ট্রলার ডুবির ঘটনায় ১৯ দালালের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ৮

সাগরপথে রোহিঙ্গাদের মালয়েশিয়া পাচারের ঘটনায় ১৯ দালালের বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় মামলা করেছে কোস্টগার্ড। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে টেকনাফ থানার সেন্টমার্টিন কোস্টগার্ডের কন্টিজেন্ট কমান্ডার এম এস ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

ঘটনার পর পরই টেকনাফ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে। পরে মঙ্গলবার উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রাতে এজাহারভুক্ত আরও চার দালালকে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তার দালালরা হল- টেকনাফের নোয়াখালীপাড়ার হাসান আলীর ছেলে সৈয়দ আলম (২৮), আব্দুন ছালামের ছেলে মো. আব্দুল আজিজ (৩০), রশিদ আহম্মদের ছেলে মো. করিম (৪৯), উলা মিয়ার ছেলে ফয়েজ আহম্মদ (৫০), জুম্মা পাড়ার মো. আজমের ছেলে সাদ্দাম হোসেন (২০), মমতাজ মিয়ার ছেলে মো. রফিক (২৬), রাজার পাড়ার মোস্তাক আহম্মদের ছেলে হুমায়ুন কবির (২০) ও উখিয়ার বালুখালী ১০ নম্বর ক্যাম্পের কবির হোসেনের ছেলে মো. ওসমান।

পুলিশ জানায়, সেন্টমার্টিনের অদূরে বঙ্গোপসাগরে রোহিঙ্গা বোঝাই ট্রলার ডুবির ঘটনায় কোস্টগার্ড ও নৌ-বাহিনীর উদ্ধার অভিযানে এই পর্যন্ত ৭৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তৎমধ্যে টেকনাফ থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে ৭৩ জনকে। বাকীদের সেন্টমার্টিনেই রাখা হয়েছে। তাদের পরবর্তীতে কোথায় রাখা হবে সে নির্দেশনা দেবেন আদালত।

পুলিশ আদালতের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছে। পাশাপাশি যে ১৬ জনকে মৃত উদ্ধার করা হয়েছে তাদেরকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। তাদের ময়না তদন্ত শেষে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে দাপন সম্পন্ন করা হবে।

পুলিশ আরও জানায়, মানবপাচারের জন্য মালয়েশিয়াগামী ট্রলারটি পরিচালনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৮ জনের মধ্যে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় নাগরিক রয়েছে। তবে রোহিঙ্গারা মূলত স্থানীয়দের কাছে প্রভাবিত হয়ে এই মানবপাচারে নেমেছে। যা একাধিক সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে বলেও জানান পুলিশ।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, ভিকটিমদের স্বীকারোক্তি মতে ১৯ দালালের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে টেকনাফ থানায় মামলা করা হয়েছে। এদের মধ্যে চারজন আগেই গ্রেপ্তার ছিল। মঙ্গলবার রাতে বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে আরও চার দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় আট দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত দালালদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়া একাধিক সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে সেন্টমার্টিনের অদূরে বঙ্গোপসাগরে ট্রলার ডুবির ঘটনায় ১৩৮ জনের মত রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু ছিল। তৎমধ্যে এখন পর্যন্ত ৭৬ জনকে জীবিত এবং ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে আরো ৪৬ জনের মত। তাদের খোঁজে এখনও উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে কোস্টগার্ড ও নৌ-বাহিনী।

এদিকে নিখোঁজ ব্যক্তিদের খুঁজতে বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো সেন্টমার্টিন সাগরে উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ কোস্টগার্ডের স্টেশন কমান্ডার লে. সোহেল রানা।

তিনি বলেন, নিখোঁজ রোহিঙ্গাদের উদ্ধারে কোস্টগার্ড সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সহিত কাজ করে যাচ্ছে।

এসএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!