চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের পুরকৌশল, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা এবং মেকাট্রনিক্স ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দুইশতেরও বেশি শিক্ষার্থী গত দুই দিন তাদের তৃতীয় বর্ষের দ্বিতীয় টার্মের চলমান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করা শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ শেখ রাসেল হলে থাকেন। গত ১৭ মার্চ দুপুরে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের মধ্যে তিনবার সংঘর্ষ হয়। শুরুতে বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে হাতাহাতি, এরপর ওইদিন দুপুর ৩টায় শেখ রাসেল হল ক্যান্টিনে এক ছাত্রলীগকর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠে।
ওই ঘটনার জের ধরে সেদিনই রাত ১১টা ৫০মিনিটে শহীদ মোহাম্মদ শাহ হল ও তারেক হুদা হলের ছাত্রলীগকর্মী নাহিদ ফেরদৌস প্রিয়ম, শাফকাত আর রুম্মান, জাহিন দাইয়ান, তৌফিক, মুন্নাসহ প্রায় ৩০ জন ছাত্রলীগকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শেখ রাসেল হলে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে শেখ রাসেল হলের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিব উদ্দীন চৌধুরী গুরুতর আহত হন। এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এই তিন বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, গভীর রাতে হলে প্রবেশ করে তাদের একজন সহপাঠীকে আহত করায়, তারা নিরাপত্তা শঙ্কায় ছিলেন। ফলে তারা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারেনি। এছাড়া তারা এই ঘটনায় জড়িত সকলের শাস্তির দাবিও করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষার্থী বলেন, আমি চুয়েটে থাকাকালীন সময়ে এমন ঘটনা দেখিনি। যারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছেন, তারা যেকোনো সময়ে এরচেয়ে বড় কোনো ঘটনাও ঘটাতে পারে। আশা করছি কর্তৃপক্ষ খুব শীঘ্রই দোষীদের শাস্তি দিয়ে নির্বিঘ্নে আমাদের পরবর্তী পরীক্ষায় অংশগ্রহণে সুযোগ করে দেবে।
আরেক নারী শিক্ষার্থী জানান, আমাদের নিরাপত্তা সমস্যা না থাকলেও, বন্ধুকে এমন আহত অবস্থায় দেখে পড়াশোনা করার মত মানসিকতা ছিল না। আমার সেই আহত বন্ধু ও তাকে যারা হাসপাতালে নিয়েছে কেউই পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিতে পারেনি।
এর আগে শিক্ষার্থীরা নিজেদের নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বর্ণনা করে নিজ নিজ বিভাগে পরীক্ষা পেছানোর জন্য আবেদন করেন। আবেদনপত্রে পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীরা এই ঘটনাকে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব বলে আখ্যা দেন।
তবে আবাসিক হলগুলোকে শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল আলম বলেন, হলে হামলার ঘটনার পর আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী দোষীদের শনাক্ত করে শাস্তির আওতাধীন আনা হবে। সে পর্যন্ত আমি শিক্ষার্থীদেরকে সুষ্ঠুভাবে শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
ডিজে