চুরির অপবাদে যুবককে বেধড়ক পেটালেন ইউপি সদস্য

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় চুরির অপবাদে মোছাদ্দেক নামের এক যুবকের উপর মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়েছে এক ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত।

রোববার (১২ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাজারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় নির্যাতনের শিকার যুবককে পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

মোছাদ্দেক উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের পূর্ব জালিয়াকাটা গ্রামের মরহুম ছাবের আহমদ সওদাগরের ছেলে।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও নির্যাতনের শিকার মোছাদ্দেকের স্ত্রী জানান, ইউপি সদস্য নুর মোহাম্মদ মাদুর নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার মোছাদ্দেককে বাড়ি থেকে তুলে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে চুরির অপবাদে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়েছে।

মোছাদ্দেকের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামীকে হত্যা করার জন্য পরিকল্পিতভাবেই ইউপি সদস্য ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে। আমি ইউপি সদস্যের বিচার দাবি করছি।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, মোছাদ্দেকের শরীরের বিভিন্ন অংশে ও পায়ে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুরুতর আহত মোছাদ্দেক অভিযোগ জানান, তার বাড়ি উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের পূর্ব জালিয়াকাটা গ্রামে। তিনি বিবাহসূত্রে পাশের ইউনিয়ন মগনামার বাজারপাড়া গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করছেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য নুর মোহাম্মদ মাদু প্রায় সময় তার স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দিতো। কিন্তু তার স্ত্রী সে প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ইউপি সদস্য প্রায় সময় স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই হুমকি দিতেন। রোববার রাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করেছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মগনামা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড়ের ইউপি সদস্য নুর মোহাম্মদ মাদু বলেন, মোছাদ্দেক ও তার স্ত্রী খুবই খারাপ প্রকৃতির মানুষ। তারা প্রতিনিয়তই এলাকার নিরীহ লোকজনের কাছ থেকে রাতের অন্ধকারে মোবাইল, টাকা পয়সাসহ কেড়ে নিতো। গতকালও এক বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়লে মোছাদ্দেককে উত্তম মাধ্যম দিয়েছে জনতা।

তিনি এও দাবি করেন, কোনও নারীকে কুপ্রস্তাব দেননি। নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে মোছাদ্দেকসহ তার স্ত্রী অপপ্রচার করছে।

এদিকে, স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, মগনামা ইউনিয়নের বাজারপাড়া গ্রামে কোনও চুরির ঘটনা ঘটেনি। চুরির ঘটনাটি ইউপি সদস্যের সাজানো নাটক ছাড়া আর কিছুই নয়।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম এ ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেনা বলে জানান। এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ কামরুল আজম জানান, তিনি ঘটনাটি সম্পর্কে শুনেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!