চবির যৌনহেনস্তার ভিডিও ছড়ানো বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ আদালতের

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ক্যাম্পাসে যৌন নিপীড়নের ভিডিও যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমদ ভুঞা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে (আইও) এই নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে মামলাটির এক আসামি নূর হোসেন শাওন জামিন আবেদন করলে তাও নামঞ্জুর করে দেন বিচারক। এছাড়া যৌন নিপীড়নের এই মামলায় সাইবার অপরাধের ধারাও যোগ করার উদ্যোগ নিতে বাদিপক্ষকে আদেশ দেন আদালত।

এর আগে আদালতে কাঠগড়ায় থাকা আসামি হাটহাজারী সরকারি কলেজ সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রথম বর্ষের ছাত্র নূর হোসেন শাওনকে অভিযোগকারী শিক্ষার্থী শনাক্ত করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জেলা পিপি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী আদালতে বলেন, ‘ভিকটিম যা বলেছেন, তার বাইরেও ঘটনা আছে। আসামিরা তাকে যৌন নিপীড়ন করেছে। এমনকি ভিডিও ধারণ করেছে। এখন আমরা আশঙ্কায় আছি, ওই ভিডিওচিত্র যদি কোনোভাবে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে ছাত্রীর সামাজিক ও পারিবারিক জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।’

এ সময় বিচারক চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমদ ভুঞা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাটহাজারী থানার এসআই মিজানুর রহমানকে লক্ষ্য করে বলেন, ‘কোনোভাবেই যাতে ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে না পড়ে, সে বিষয়ে আপনারা পদক্ষেপ নিন। প্রয়োজনে সিআইডি বা অন্য কোনো সংস্থার সহায়তা নিন।’

গত ১৭ জুলাই রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একদল তরুণের হাতে এক ছাত্রী যৌন নিপীড়নের শিকার হন। এ সময় ওই ছাত্রীকে বেঁধে বিবস্ত্র করে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করা হয়েছে বলেও মামলায় অভিযোগ করা হয়।

পরদিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের কাছে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী এবং এরপর তিনি হাটহাজারী থানায় পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে হাটহাজারী থানায় মামলাও করেন। এরপরই ঘটনার খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে ছড়িয়ে পড়লে ক্যাম্পাস উত্তাল হয়ে ওঠে প্রতিবাদ বিক্ষোভে। রাতেই ছাত্রী হলগুলো থেকে ছাত্রীরাও নেমে এসে বিক্ষোভ শুরু করে।

২২ জুলাই নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে চারজন এবং ২৩ জুলাই বহদ্দারহাট এলাকা একজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন— মোহাম্মদ আজিম (২৩), নুরুল আবছার বাবু (২২), নূর হোসেন শাওন (২২), মাসুদ রানা (২২) ও সাইফুল ইসলাম (২৪)।

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) আদালতের শুনানিতে হাজির থাকা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রবিউল হাসান ভুঁইয়া ও সহকারী প্রক্টর অরূপ বড়ুয়া আদালতে অবহিত করেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুই ছাত্রকে বহিস্কার করা হয়েছে। অন্য তিনজনসহ ৫ আসামিকেই ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!