চট্টগ্রাম বন্দরে নাটকের পর নাটক, ১২ নম্বর বার্থ হঠাৎ ‘কুরুক্ষেত্র’

নানা নাটকীয়তার পর এবার চট্টগ্রাম বন্দরের জেনারেল কার্গো বার্থের (জিসিবি) ছয়টি বার্থে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের নিয়োগ কব্জা করতে চলছে গোপন রাজনীতি। অপারেটর নিয়োগের দরপত্রে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে শুরুতে চলেছে সমঝোতার চেষ্টা। আর এখন নিয়োগ চূড়ান্ত হওয়ার শেষপ্রান্তে এসে একটি মহল সক্রিয় হয়ে উঠেছে অন্তত একটি বার্থে নতুন করে দরপত্র আহ্বান করার চেষ্টায়। বন্দর কর্তৃপক্ষের একটি অংশও পুনঃদরপত্র আহ্বানের সেই চেষ্টায় হাওয়া দিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে তৈরি হতে যাচ্ছে নতুন নাটকীয়তা।

গত ২ জুন দরপত্র কমিটির আহ্বায়ক ও বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মোহাম্মদ জাফর আলম পাঁচটি যোগ্য প্রতিষ্ঠানের নাম এবং একইসঙ্গে তিনি দরপত্রের শর্ত পূরণ করতে না পারায় দুটি প্রতিষ্ঠানকে অযোগ্য সাব্যস্ত করে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যানকে মূল্যায়ন প্রতিবেদন জমা দেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে, এই প্রতিবেদন আগামী দু একদিনের মধ্যে বন্দরের বোর্ডসভায় অনুমোদন সাপেক্ষে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের জেনারেল কার্গো বার্থের ছয়টি বার্থে আগামী ৫ বছরের জন্য কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের জন্য অপারেটর নিয়োগের দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল গত ৮ ফেব্রুয়ারি। এতে মোট ছয় লটে ১৪টি দরপত্র জমা পড়ে। ছয় অপারেটর প্রতিষ্ঠান এবং একমাত্র টার্মিনাল অপারেটর সাইফপাওয়ারটেক লিমিটেড দুটি করে লটে দরপত্র জমা দেয়।

দরপত্রে অংশ নেওয়া এই প্রতিষ্ঠানগুলো হল ৬ নম্বর বার্থে এফ কিউ খান অ্যান্ড ব্রাদার্স, ফজলী সন্স ও সাইফপাওয়ারটেক লিমিটেড, ৯ নম্বর বার্থে এফকিউ খান অ্যান্ড ব্রাদার্স ও ফজলী সন্স, ১০ নম্বর বার্থে বশির আহমেদ অ্যান্ড কোম্পানি এবং মেসার্স এ অ্যান্ড জে ট্রেডার্স, ১১ নম্বর বার্থে বশির আহমেদ অ্যান্ড কোম্পানি ও এঅ্যান্ডজে ট্রেডার্স। ১২ নম্বর বার্থে এভারেস্ট পোর্ট সার্ভিসেস, এমএইচ চৌধুরী ও সাইফপাওয়ারটেক। ১৩ নম্বর বার্থে এভারেস্ট পোর্ট সার্ভিসেস ও এমএইচ চৌধুরী।

দরপত্র বিক্রির শুরু থেকেই চট্টগ্রাম বন্দরের বড় আকারের এই কাজ নিয়ে শুরু হয় নানা নাটকীয়তা। প্রভাবশালী বিভিন্ন মহল এই দরপত্র নিয়ে গোপন রাজনীতিতে নেমে পড়ে। তৈরি হয় কয়েকটি পক্ষ। চলে গোপন সমঝোতার চেষ্টাও।

চট্টগ্রাম বন্দর সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা যায়, বার্থ অপারেটর নিয়োগের দরপত্র বিক্রি শুরু হওয়ার পরপরই দরপত্র কেনে একমাত্র টার্মিনাল অপারেটর সাইফপাওয়ারটেক লিমিটেড। এতে চিন্তিত হয়ে পড়ে কোনো কোনো মহল। দরপত্র জমা দেওয়া থেকে সাইফপাওয়ারটেককে বিরত রাখতে চলে গোপন সমঝোতার চেষ্টা। যদিও সেই চেষ্টা শেষ পর্যন্ত সফলতার মুখ দেখেনি।

তবে শেষ পর্যন্ত দরপত্রের শর্ত পূরণ করতে না পারায় নিয়োগ থেকে বাদ পড়ে বন্দরের দুই জায়ান্ট সাইফ পাওয়ারটেক ও এমএইচ চৌধুরী। প্রতিযোগিতায় এখন টিকে রয়েছে পাঁচটি অপারেটর প্রতিষ্ঠান। পাঁচটি বার্থে পাঁচটি অপারেটর প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ চূড়ান্ত হলেও বাকি একটি বার্থের বাটোয়ারা নিয়ে তৈরি হয়েছে তুমুল নাটকীয়তা। এর অংশ হিসেবে এখন একটি মহল সক্রিয় হয়ে উঠেছে অন্তত একটি বার্থে (১২ নম্বর) নতুন করে দরপত্র আহ্বান করার চেষ্টায়। বন্দর কর্তৃপক্ষের একটি অংশও পুনঃদরপত্র আহ্বানের সেই চেষ্টায় হাওয়া দিয়ে যাচ্ছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!