চট্টগ্রামে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, স্বামী আটক

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর স্বামীকে আটক করা হয়েছে।

সোমবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে মিরসরাই পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব গোভনিয়া প্রকাশ আমবাড়িয়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

নিহত গৃহবধূর নাম সাদিয়া আক্তার (১৯)। তিনি সীতাকুণ্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাজীপাড়া এলাকার মো. খান সাবের মেয়ে।

এই ঘটনায় তার স্বামী তাজুল ইসলাম রুবেলকে আটক করেছে পুলিশ। রুবেল মিরসরাই পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব গোভনিয়া প্রকাশ আমবাড়িয়া এলাকার সিরাজুল হকের ছেলে।

শ্বশুড় বাড়ির লোকজন এই ঘটনাকে আত্মহত্যা বললেও গৃহবধূর পরিবারের দাবি, যৌতুকের জন্য হত্যা করা হয়েছে সাদিয়াকে।

জানা গেছে, চার বছর আগে রুবেলের সঙ্গে সাদিয়া আক্তারের ৭ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয়। উসুল বাবদ ছিল ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তখন মেয়ের ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়ায় বিবাহের কাবিন রেজিস্ট্রি করা হয়নি। পরবর্তীতে যখন মেয়ের বয়স ১৮ হবে তখন কাবিননামা রেজিষ্ট্রারি করা হবে বলে জানানো হয়।

সাদিয়ার মামী মর্জিনা আক্তার বলেন, ‘সোমবার সকাল ১০টার দিকে সাদিয়া তার মাকে ফোন করে বলেন, আজকের মধ্যে ৯০ হাজার টাকা না দিলে আমাকে মেরে ফেলবে। তখন তার মা বলেন, আমার কাছেতো টাকা নাই, অন্যজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বুধবারের মধ্যে দিয়ে আসবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘এরপর দুপুরে দোকানের লোকজন এসে আমাকে বলে, আপনার ভাগনি আত্মহত্যা করেছে। তখন আমি গিয়ে দেখি, খাটের ওপর ফ্যানের সঙ্গে ঝোলানো অবস্থায় একটা মোড়ার ওপর এক পায়ের হাঁটু বাঁকা অবস্থায় আছে সাদিয়ার মরদেহ। আত্মহত্যা করলে মোড়াতো সড়ে যাওয়ার কথা। সে যদি আত্মহত্যা করে তাহলে দরজা ভেতর থেকে লাগানো থাকার কথা। দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করার কথা। দরজারতো কোনো ক্ষতি হয়নি। আমার ভাগনিকে সিঙ্গারার সঙ্গে কিছু মিশিয়ে দিয়ে মেরে ফেলছে। এলাকার ভূইয়া স্টোর থেকে একটি মাত্র সিঙ্গারা নিয়েছিল তার স্বামী রুবেল।’

মর্জিনা বলেন, ‘বিয়ের চার মাস পর রুবেল ওমান চলে যায়। গত ১৫ দিন আগে দেশে ফিরে আসে। আসার পর থেকে সাদিয়াকে টাকার জন্য নির্যাতন করতো। সাদিয়া যেন তার কোনো আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে না পারে, সেজন্য তার মোবাইলে সকলের নম্বর ব্লক করে দেওয়া হয়েছে এবং তাকে কোথাও যেতেও দিতো না।’

মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে সুরতহাল শেষে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছি। তবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। এই ঘটনায় স্বামী তাজুল ইসলাম রুবেলকে আটক করা হয়েছে। এছাড়াও আত্মহত্যার প্ররোচণায় পরিবারের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হবে।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!