চট্টগ্রামে করোনা আবার থাবা বসানোর অপেক্ষায়, ৫ এলাকার ৯ জনই পজিটিভ

অলিগলিতে চলছে অহেতুক ঘোরাফেরা। চায়ের দোকানে চলছে জমজমাট আড্ডা। কনভেনশন সেন্টারগুলোতে ঘটা করে আয়োজন হচ্ছে বিয়ে-মেজবান। অফিস-আদালত কিংবা গণপরিবহনে যাতায়াতে স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। মোড়ে মোড়ে সামাজিক দূরত্ব না মেনে চলছে অবাধ জনসমাগম। এসব কারণে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের শুরুতেই চট্টগ্রামে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম নগরীতে ১৪৪ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) দেখা গেছে, চট্টগ্রামের বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী, এনায়েত বাজার, আলফালাহ গলি, মুরাদপুর, বায়েজিদ বোস্তামী এলাকার নয়জনের করোনা নমুনা পরীক্ষায় নয়জনেরই রিপোর্ট এসেছে করোনা পজিটিভ। এর অর্থ হচ্ছে, প্রায় সব এলাকাতেই করোনাভাইরাস সক্রিয় রয়েছে। নতুন বছরের শুরুতে করোনা সংক্রমণ আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে— এমন আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

চট্টগ্রামে গত কয়েক মাসে করোনা রোগী শনাক্তের হার ১৩ থেকে ১৫ শতাংশ থাকলেও এখন শনাক্তের হার বাড়ছে জ্যামিতিক হারে। নগরীর সরকারি ও বেসরকারি ছয়টি ল্যাবে দৈনিক আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা গড়ে ২০০।

চট্টগ্রামে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়েছিল গত ৩ এপ্রিল। এ পর্যন্ত নগরীতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৭৭৬ জনে। তবে এটা সরকারি হিসাব। বাস্তবে করোনা রোগীর সংখ্যা এর চেয়েও বহুগুণ বেশি।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেছেন, করোনা মোকাবেলায় সরকারের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক নানান পদক্ষেপ নেওয়া হলেও বাস্তবে সেটা কেউ মানছেন না। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব না মেনে অহেতুক ঘোরাফেরাসহ আড্ডা, গণপরিবহনে গাদাগাদি করে যাতায়াতের কারণে করোনার প্রকোপ বাড়ছে।

সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেল-জরিমানা করা হলেও উন্নতি হয়নি পরিস্থিতির। গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে শতভাগ পজিটিভ আসার বিষয়টিকে উদ্বেগের বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রামে সরকারি ও বেসরকারি ছয়টি ল্যাব ও কক্সবাজারের একটি ল্যাবসহ সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ২৯২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয় ১৭২ জনের। এর মধ্যে চট্টগ্রাম নগরেই আছেন ১৪৪ জন। চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় বাকি ২৮ জন।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের প্রধান ডা. আব্দুর রব মাসুম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘শীত শুরু হওয়ার সাথে সাথে নগরীতে করোনার প্রকোপ বেড়ে চলেছে। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব না মানা এবং জনসমাগমের কারণে করোনা শনাক্তের হার বাড়ছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ করতে হবে। বেশি বেশি সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। চট্টগ্রামে দৈনিক ১৩ থেকে ১৫ শতাংশ করোনা রোগী শনাক্ত হলেও বর্তমানে অতিরিক্ত হারে বাড়তে শুরু করেছে।’

এমএফও/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!