চট্টগ্রামে করোনায় মৃত্যু বেড়ে দ্বিগুন, ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ২৯৮

করোনার ‘তেজ’ কমার পরদিনই চট্টগ্রামে আবারও বড় লাফ দিল মৃত্যুতে। শনাক্তের সংখ্যা আগের দিনের তুলনায় কিছুটা কমলেও মৃত্যুর সংখ্যা আগের দিনের তুলনায় দ্বিগুন বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে মারা যাওয়া ৮ জনের মধ্যে নগরীর ২ জন এবং উপজেলার ৬ জন। আগের দিন চট্টগ্রামের উপজেলা পর্যায়ে ৩ জন এবং নগরীতে ১ জনের মৃত্যু হয়েছিলো। অন্যদিকে, শনাক্ত নেমে এসেছে তিনশ’র নিচে। নতুন করে ২৯৮ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। যাদের মধ্যে নগরের ১৫৩ জন এবং বিভিন্ন উপজেলার ১৪৫ জন রয়েছেন। আগের দিন চট্টগ্রামে ৩৩২ জন শনাক্ত হয়েছিল।

এর আগে গত ২৭ জুলাই চট্টগ্রামে করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল। পরদিন ২৮ জুলাই এ সংখ্যা দাড়ায় ১৭ জন। ২৯ জুলাই ১৭ জন এবং তার আগে গত ২০ জুলাই ১৫ জন এবং ১১ জুলাই ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছিলো। তবে শনিবার (২১ আগস্ট) একদিনে মৃত্যু কমে এসেছিল ৪ জনে।

এ নিয়ে চট্টগ্রামে মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৭ হাজার ১৩৩ জন। মোট শনাক্তদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর ৭১ হাজার ৪ জন। আর জেলার বিভিন্ন উপজেলার ২৬ হাজার ১২৯ জন। অন্যদিকে, করোনা আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত মোট ১ হাজার ১৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৬৬৭ জন চট্টগ্রাম নগরের। আর বিভিন্ন উপজেলায় মারা গেছেন ৫১১ জন।

রোববার (২২ আগস্ট) চট্টগ্রাম জেলার করোনা সম্পর্কিত এ তথ্য নিশ্চিত করেন সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। সিভিল সার্জনের প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন আগের দিনের তুলনায় নমুনা পরীক্ষা কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজার হাসপাতাল ল্যাব ও চট্টগ্রামের ৯টি ল্যাব এবং এন্টিজেন টেস্টসহ মোট ১ হাজার ৯৭২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর আগের দিন এ সংখ্যা ছিলো ২ হাজার ৬০৬ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় উপজেলা পর্যায়ে যারা আক্রান্ত হয়েছেন এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রাঙ্গুনিয়ায়। সেখানে ৩০ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। এছাড়া হাটহাজারীতে ২৬ জন, রাউজানে ২৩ জন, বোয়ালখালীতে ২২ জন, ফটিকছড়িতে ১৪ জন, আনোয়ারায় ৮ জন, মিরসরাইয়ে ৫ জন, সীতাকুণ্ড ও লোহাগাড়ায় ৪ জন করে, সন্দ্বীপ ও সাতকানিয়ায় ৩ জন করে, পটিয়ায় ২ জন এবং বাঁশখালীতে ১ জন করোনা শনাক্ত হয়। এদিন চন্দনাইশে কোন করোনা রোগী পাওয়া যায়নি।

ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৯৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন করে ৬১ জনের করোনা পজেটিভ আসে। এদের মধ্যে ১১ জন নগরের হলেও বাকি ৫০ জন হচ্ছে বিভিন্ন উপজেলার। চট্টগ্রামের প্রধান করোনা পরীক্ষাগার ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৭৪৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬৩ জনকে করোনার জীবাণুবাহক হিসেবে শনাক্ত করা হয়। যাদের ৪৩ জনই নগরের, বাকি ২০ জন বিভিন্ন উপজেলার। অন্যদিকে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ২২০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে ৪২ জনের শরীরে করোনার জীবাণু পাওয়া গেছে। যাদের ২৮ জন নগরের, ১৪ জন উপজেলার। একই সময়ে চট্টগ্রাম ভেটেনারি ও এনিম্যাল সাইন্স বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৫৭ শরীরে করোনার অস্তিত্ব মিলেছে। এদের মধ্যে ১৯ জন নগরের, বাকি ৩৮ জন বিভিন্ন উপজেলার।

এছাড়া, গত ২৪ ঘন্টায় জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) ল্যাবে ৫ জনের পজিটিভ আসে।

এদিন কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে সেটিতে নেগেটিভ আসে।

চট্টগ্রামের বেসরকারি ল্যাবগুলোর মধ্যে এদিন ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়নি।

চট্টগ্রামের বিভিন্ন ল্যাবে এন্টিজেন টেস্ট এ ২৩ জনের শরীরে করোনার অস্তিত্ব মিলেছে। মেডিকেল সেন্টার হাসপাতাল ল্যাবে ৬ জনের করোনা পজেটিভ আসে। এদিন শেভরন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ১৮ জনের পজিটিভ আসে। এছাড়া, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ১৭ জন এবং ইপিক হেলথ কেয়ার ল্যাবে ০৬ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!