চট্টগ্রামে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের দেরীতে উত্তরপত্র দেওয়ার অভিযোগ, অভিভাবকদের ক্ষোভ

এসএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মিউনিসিপ্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে যথাসময়ে উত্তরপত্র না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যথাসময়ে উত্তরপত্র না দেওয়ায় পরীক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট হয়েছে, বৃত্ত ভরাট করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে পরীক্ষার্থীরা। এনিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

একাধিক পরীক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিউনিসিপ্যাল স্কুলের ২০৫ নম্বর কক্ষে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নৈর্ব্যক্তিকের জন্য ওএমআর শিট দেওয়া হলেও সৃজনশীল অংশের জন্য উত্তরপত্র দেওয়া হয়নি। ১০টায় নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন দেওয়ার পরে সাড়ে ১০টায় আবার সৃজনশীলের জন্য উত্তরপত্র দেওয়া হয়। এর ফলে পরীক্ষার নির্ধারিত সময়ে উত্তরপত্রে রেজিষ্ট্রেশন নম্বর, রোল নম্বর ও বিষয় কোড ভরাট করতে হয়েছে। ওই কক্ষে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল ও সেন্ট প্লাসিড’স স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের ৪৬ জন শিক্ষার্থী ছিল।

অথচ পাশের কক্ষেই সাড়ে ৯টার দিকে সৃজনশীল ও নৈর্ব্যক্তিকের জন্য উত্তরপত্র দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। শিক্ষা বোর্ড থেকে এমন নির্দেশনা আছে। তবুও ২০৫ নম্বর কক্ষে ঠিক সময়ে দেওয়া হয়নি উত্তরপত্র।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কক্ষে পরীক্ষা দেওয়া চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের এক শিক্ষার্থী জানায়, সাড়ে ১০টায় সৃজনশীলের জন্য খাতা দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা চলার মধ্যে রেজিস্ট্রেশন নম্বর, রোল নম্বর ও বিষয় কোড পূরণ করতে হয়েছে। আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট হয়েছে।

আরেক শিক্ষার্থী জানায়, নৈর্ব্যক্তিকের ৩০ মিনিট শেষ হওয়ার পর সাড়ে ১০টায় সৃজনশীলের উত্তরপত্র দেওয়া হয়েছে। অনেকে তাড়াহুড়ো ভরাট করতে গিয়ে ভুল করে ফেলেছে।

এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন দুটি অংশ থাকে। এর একটি হল নৈর্ব্যক্তিক, অন্যটি সৃজনশীল অংশ। আলাদাভাবে নৈর্ব্যক্তিকের ওএমআর ও উত্তরপত্র দেওয়া হয়। ওএমআর ও উত্তরপত্রে পরীক্ষার্থীদের রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও বিষয় কোড দিয়ে বৃত্ত ভরাট করতে হয়। এতে সময় লাগে অন্তত ১৫-২০ মিনিট। সেজন্য পরীক্ষা শুরু হওয়ার অন্তত ২০ আগেই ওএমআর শিট দিয়ে দেওয়া হয়। যাতে প্রশ্ন পত্র পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষার্থীরা উত্তর লেখা শুরু করতে পারেন। কিন্তু মিউনিসিপ্যাল স্কুল কেন্দ্রে পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৩০ মিনিট পর সৃজনশীল অংশের উত্তরপত্র দেওয়া হয়। এর ফলে পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত সময়ে উত্তরপত্রের ওএমআর পূরণ করতে হয়েছে। ফলে নষ্ট হয়েছে পরীক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ সময়।

ওই কক্ষে পরীক্ষা দেওয়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক ডা. মো. আজিজুল হক বলেন, ‘ওএমআর শিট পূরণ করা, খাতায় স্কেল করা ও শিক্ষকের স্বাক্ষরের জন্য আলাদা সময়ের দরকার হয়। সেজন্য পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেই ওএমআর শিট দেওয়া হয়। অন্য রুমে আগে দিলেও ২০৫ নম্বর কক্ষে সাড়ে ১০টায় ওএমআর দেওয়া হয়েছে। এতে করে আমরা ছেলেসহ ওই কক্ষে পরীক্ষা দেওয়া শিক্ষার্থীদের অন্তত ১০ মিনিট সময় নষ্ট হয়েছে। একজন শিক্ষক কোনোভাবে পরীক্ষার্থীর এতো বড় ক্ষতি করতে পারেন না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মিউনিসিপ্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাহেদুল কবির চৌধুরী বলেন, ‘আমি অভিযোগটি শুনেছি। তারা এটি ঠিক করেননি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর এএমএম মুজিবুর রহমান বলেন, ‘হল সুপারের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আরএম/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!