চট্টগ্রামের হাসপাতালে টাকা ছাড়া মেলে না সেবা, ক্লার্ককে তাৎক্ষণিক বদলি

দুদকের কাছে স্বীকারোক্তি কর্তৃপক্ষের

সরকারি অর্থ বরাদ্দ থাকার পরও রোগীদের কাছ থেকে নেওয়া হয় বাড়তি টাকা—এমন অভিযোগ চট্টগ্রামের মিরসরাই বারইয়ারহাট জেনারেল হাসপাতালের বিরুদ্ধে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ডিমান্ড সাইড ফাইন্যান্সিংয়ের (ডিএসএফ) প্রকল্পের সুবিধাভোগী নারীদের প্রসবকালীন সময় সরকারের দেওয়া আর্থিক ও অন্যান্য সুবিধা না দিয়েই আদায় করা হয় বাড়তি টাকা। সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া টাকায় সন্তান জন্মদানের খরচ মেটানো সম্ভব না, এমন কথা বলেই এতদিন রোগীদের পকেট কাটছিল প্রতিষ্ঠানটি। আর এসব কাজের নাটের গুরু মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক ক্লার্ক। পরে তাকে তাৎক্ষণিক সন্দ্বীপে বদলি করা হয়।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) মিরসরাইয়ে জেনারেল হাসপাতালে অভিযান চালায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযানে দুদকের কাছে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া কথা স্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এ সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল মালেকের নেতৃত্বে এই অভিযানে অংশ নেয় উপসহকারী পরিচালক মুহাম্মদ আবুল হাসান ও উপসহকারী পরিচালক মো. মিজানুর রহমান চৌধুরী।

মিরসরাই বারইয়ারহাট জেনারেল হাসপাতাল ভর্তি ও সি-সেকশনের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেওয়া ডিএসএফ সুবিধাভোগী দু’জন প্রসূতির নিকটাত্মীয় জানান, হাসাপতালে সেবা নিতে সরকার প্রদত্ত টাকার অতিরিক্ত আরও কিছু টাকা প্রদান করতে হয়। সরকার প্রদত্ত স্বল্প টাকায় সি-সেকশনের মাধ্যমে সন্তান জন্মদানের খরচ মেটানো সম্ভব না বলে জানানো হয় হাসপাতাল থেকে।

দুদক জানায়, বারইয়ারহাট জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের লিখিত বক্তব্য ও সংগৃহীত রেকর্ডপত্র থেকে জানা গেছে, পরে এসব ঘটনায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট (ইপিআই) মো. কবির হোসেনের (দায়িত্বরত ক্লার্ক) অনৈতিক আর্থিক লেনদেনে সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে দুদক এনফোর্সমেন্ট টিম।

দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল মালেক জানান, অভিযানের বিষয়টি চট্টগ্রাম সিভিল সার্জনকে অবহিত করা হলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে মো. কবির হোসেনকে মিরসরাই থেকে সন্দ্বীপে বদলি করা হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

অভিযানের বিষয় রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দুদক এনফোর্সমেন্ট টিমের প্রতিবেদন কমিশন বরাবরে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেওয়া হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

এমএ/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!