সড়কে ছিনতাইয়ের নতুন কৌশল ‘যুবলীগ নেতা’!

ছিনতাইকারী দলের নেতা টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে কথা বলা শুরু করে সালাম দিয়ে। স্থানীয় যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে তার কর্মী অসুস্থ বলে প্রথমে সহায়তা চান। সহায়তার জন্য টাকা দিতে মানিব্যাগ বের করা মাত্রই সহযোগীরা এসে ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে মোবাইল, টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয়। ৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে নয়টায় নগরীর লাভলেইন এলাকায় এমন অভিনব ছিনতাইয়ের শিকার হন এক ব্যবসায়ী। তার করা মামলায় এই চক্রের নেতা নজরুল ইসলাম তার তিন সহযোগী নিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন কোতোয়ালী থানা পুলিশের হাতে।

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাতটায় চট্টগ্রাম নগরীর নুর আহমদ সড়কের নেভাল মোড় থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নজরুল ইসলাম (৫০), তোমিজ উদ্দিন (৪৮), মিঠুন নায়ক (২৭), মো. হাসান হারুন (২৫)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২৮ ইঞ্চি লম্বা একটি ওয়ান শুটারগান, দুটি ছুরি ও তিনটি বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়।

কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন বলেন, আটক নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে হাফ ডজন মামলা আছে। তিনি ছয়বার কারাভোগ করে জামিনে ছিলেন। সর্বশেষ ফেব্রুয়ারিতে গ্রেপ্তার হয়ে আড়াইমাস কারাভোগ করে জামিনে মুক্তি পান। দুইমাস গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠিতে অবস্থানের পর চট্টগ্রাম এসে আবার ছিনতাই শুরু করেছেন। তবে এবার নতুন কৌশল।

ওসি মহসিন আরো জানান, নজরুল এক সময় অন্য ছিনতাইকারী দলের সদস্য থাকলেও সম্প্রতি নিজে দল গঠন করে এই কায়দায় গত এক-দেড় মাসে শতাধিক ছিনতাই করেছে। নজরুলের স্বীকারোক্তি মতে অভিযান চালিয়ে তার খুলশীর ওয়ার্লেস এলাকার বাসায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকৃত তিনটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়। এই চক্রটি সব সময় রিক্সার সিটের নিচে আগ্নেয়াস্ত্র রাখে।

আটককৃত নজরুলের তিন ছেলে ও এক মেয়ে আছে বলে জানান তার স্ত্রী বেবি আক্তার। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন, ছেলেরা পড়ালেখা করছে। স্বামীকে বিপথ থেকে ফেরাতে অনেক চেষ্টা চালিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এসব নিয়ে কথা বললে আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন। এ সময় তিনি স্বামীর নির্যাতনে ডান হাতে আঘাতের চিহ্ন দেখান।

ছিনতাইকারী চারজনের মধ্যে নয়ন ও হারুন রিক্সাচালক। হারুন দীর্ঘদিন এই চক্রের সাথে আছেন। মিঠুন যুক্ত হয়েছেন নজরুল জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর। কিন্তু বিষয়টি কিছুই জানতেন না তার কর্মজীবী স্ত্রী চন্দনা রায়। চন্দনা রায় বলেন, ‘আমাদের বিয়ের বয়স দুই বছর। আমার বেতনের টাকায় সংসার চলে। তার ওপর আমার পক্ষ থেকে ইনকামের কোন চাপ ছিলনা। তবুও সে কেন গোপনে এই পথে এলো তা বুঝিনি।’

এফএম/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!