চট্টগ্রামের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক যৌতুক চেয়ে স্ত্রী ও পরিবারকে হয়রানি করছেন, অভিযোগ প্রকাশ্যে

অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ভাইরালের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ

চট্টগ্রামের এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে তার স্ত্রীসহ শ্বশুর-শাশুড়িকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। যৌতুকের জন্য তাদের হয়রানি করা হচ্ছে— এমন অভিযোগ এনে কুমিল্লায় থাকা তার শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। ওই শিক্ষক চট্টগ্রামে কর্মরত থাকলেও তার বাড়িও কুমিল্লায়।

শিক্ষকের নাম ইফতেখার আহমেদ রানা। তিনি চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এ্যানিম্যাল সাইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি এন্ড ভেটেরিনারি পাবলিক হেলথ ফ্যাকাল্টি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। তিনি কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের পয়াত গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে। তার স্ত্রী কুমিল্লার একটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষে পড়ছেন।

শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় এলাকার একটি পার্টি সেন্টারে সাংবাদিক সম্মেলনে ইফতেখার আহমেদ রানার শ্বশুর কুমিল্লার বুড়িচং আদর্শ সদর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের মো. কামাল হোসেন লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন, ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর ইফতেখার আহমেদ ওরফে রানার সঙ্গে ৯ লাখ টাকা কাবিনে তার মেয়ে নুজহাত তাবাসসুম ঐশীর বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন না যেতেই উচ্চতর ডিগ্রিসহ বিভিন্ন অজুহাতে যৌতুকের টাকার জন্য তার মেয়েকে চাপ সৃষ্টি করেন। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে রানাকে তার দাবিকৃত যৌতুকের টাকা দেওয়া হয়।

অভিযোগে বলা হয়, ইফতেখার আহমেদ রানা ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রানা কুমিল্লা শহরে ফ্ল্যাট কেনার জন্য ১৫ লাখ টাকা দাবি করেন। যৌতুক হিসাবে এ টাকা এনে দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তার মেয়েকে কিল, ঘুষি, লাথিসহ শারীরিকভাবে নির্যাতন করে এবং গলা চেপে হত্যার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে কয়েকটি অলিখিত স্ট্যাম্পে তার মেয়ের স্বাক্ষর নিয়ে বাসা থেকে বের করে দেন।

এতে নিরুপায় হয়ে নারী ও শিশু আদালতে মামলা করলে আদালত ইফতেখার আহমেদ রানার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এ মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।

পরে আপোষের শর্তে আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে ইফতেখার আহমেদ রানা বাদীপক্ষকে মামলা প্রত্যাহার করার জন্য উল্টো ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে। এমনকি তার মেয়ের দাম্পত্য জীবনের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ভাইরাল করে সম্মান নষ্ট করার হুমকি দেয়। মামলা তুলে না নেওয়ায় গত ২৬ জানুয়ারি ঐশীসহ তার বাবা-মা ও সাক্ষীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।

এতে ঐশী নামের ওই ছাত্রী কলেজে যাওয়া-আসা করতে পারছে না এবং তাদের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়।

তবে অভিযোগের বিষয়ে ইফতেখার আহমেদ রানা স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, যৌতুক দাবি ও হয়রানির বিষয়টি সঠিক নয়। ঘর-সংসার না করায় ও পারিবারিক অশান্তির কারণে সমঝোতায় ব্যর্থ হয়ে তিনি তার স্ত্রীকে অনেক আগেই তালাক দিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!