চট্টগ্রামের বিপিসি কর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় দুদকে, লুটের টাকায় স্ত্রীর নামে ভবন

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) চট্টগ্রাম অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক (বণ্টন ও বিপণন) মুহাম্মদ মোরশেদ হোসাইন আজাদ। নিয়োগ জালিয়াতি, অবৈধভাবে তেল বিক্রি, দোকান ও স্ত্রীর নামে নগরীর বিভিন্ন জায়গায় জমি কেনাসহ বিস্তর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার এসব দুর্নীতির অভিযোগ জমা পড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক)।

গত ২৪ জানুয়ারি ঢাকার দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয়ে এই অভিযোগ দেওয়া হয়।

অভিযোগের বিবরণীতে বলা হয়, বিপিসির আওতাধীন বিভিন্ন পেট্রোল পাম্পগুলোর এজেন্টদের ভেজাল তেল বিক্রিতে উৎসাহী করতেন মুহাম্মদ মোরশেদ হোসাইন আজাদ। এসব এজেন্টদের প্রতি মাসের তেলের অঙ্কে নয়-ছয় করে হাতিয়ে নিতেন কোটি কোটি টাকা। অথচ এই কর্মকর্তা বিপিসিকে প্রতিবেদন পাঠাতেন ভেজালমুক্ত তেল সরবরাহের।

অভিযোগে বলা হয়, সিস্টেম অ্যাক্সেস কন্ট্রোল লিস্ট (এসএসিএল) থাকাকালীন যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে তার ‘পছন্দের’ প্রতিষ্ঠান ফারহান ট্রেডিং নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগসাজশে ৬০ থেকে ৭০টি গ্রেডের ৬ হাজার ৮৬৩ ড্রাম বিটুমিন নামমাত্র মূল্য ২ কোটি ৯৭ লাখ ৭৩ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি করে দেন। এর মধ্যে কিছু বিটুমিন বিক্রি করে দেন প্রতি ড্রাম ৫৮০০ টাকায়। অথচ ওই সময় প্রতিড্রাম বিটুমিনের বাজারমূল্য ছিল ৭ হাজার টাকা। এভাবে তিনি বিটুমিন বেচে হাতিয়ে নেন প্রায় ১০ লাখ টাকা।

এতে আরও বলা হয়, এসএওসিএল থাকা অবস্থায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে প্রজেক্টের জন্য আমদানি করা স্টিল স্ট্রাকচার স্ক্র্যাপ পছন্দের লোকের কাছে অল্প দামে বিক্রি করে দেন আজাদ। ওই সময় স্টিল স্ট্রাকচারের আমাদানি খরচ ছিল প্রতিকেজি ১২৫ টাকা। এক্ষেত্রে কোম্পানির ৬৯ লাখ টাকা নিজের পকেটে ভরে তিনি।

ওই স্টিল স্ট্রাকচার যারা কিনেছেন সেখানে ওই মালামাল সরবরাহ করতে দেখানো হয়েছে ১১টি গাড়ি। কিন্তু স্টিল স্ট্রাকচার বহনের গাড়ি ছিল মাত্র ১০টি। বিষয়টি মুহাম্মদ মোরশেদ হোসাইন আজাদ জেনেও চুপ ছিলেন। এই চুপ থাকার জন্য তার পকেট ভারী হয়েছিল ৬৫ লাখ ৭০০ টাকায়।

দুর্নীতি দমন কমিশনে দেওয়া অভিযোগের বিবরণীতে বলা হয়, এসএসিএলে থাকাকালীন আমদানি করা লুব (বেস অয়েল) বিপিসি নির্ধারিত মূল্যে ১১৭ টাকা প্রতি লিটার বিক্রি করার কথা থাকলেও আজাদ তার নিজস্ব ক্ষমতায় ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টের কাছে তেল বিক্রি করেন ১০৯ টাকা দরে।

অভিযোগে বলা হয়, দুর্নীতির মাধ্যমে আয় করা এসব অবৈধ টাকায় তিনি চট্টগ্রাম নগরীতে করেছেন ২০টিরও বেশি দোকান। চান্দগাঁওয়ের কালুরঘাট ও বাকলিয়ার কালামিয়া বাজার সংলগ্ন এলাকায় স্ত্রী লুৎফা জাহানের নামে গড়েছেন বহুতল ভবন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মুহাম্মদ মোরশেদ হোসাইন আজাদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি দায়িত্বে থেকে রাষ্ট্রের অনেক কাজ করেছি। অনেকে আমার কাজগুলো ভালভাবে নিতে পারেনি। দুদকে দেওয়া ওই অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!