চট্টগ্রামের বিএনপি নেতারা গ্রেপ্তার আতঙ্কে, বন্ধ ফোন নম্বর

চট্টগ্রামে পুলিশ আতঙ্কে আছে বিএনপির নেতারা। সিনিয়র নেতারা রয়েছেন আড়ালে। এমনকি ‘হেভিওয়েট নেতাদের’ মোবাইলও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। গ্রেপ্তার এড়ানোর কৌশল হিসেবে তারা মোবাইল বন্ধ রাখছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা। বিএনপি সূত্র বলছে, মোবাইল বন্ধ থাকলেও নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখতে কৌশলে সার্বক্ষণিক নির্দেশনা দিচ্ছে তারা।

চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, মহানগর বিএনপির আহবায়ক ড. শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান ও মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশারফ হোসেন দীপ্তিক ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। চট্টগ্রামের হেভিওয়েট এই চার নেতার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নেওয়ার প্রতিবাদে রোববার সকাল সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে চট্টগ্রামের বিএনপি নেতারা। এনিয়ে শনিবার (৪ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নেতাদের নাম থাকলেও মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হরতালের বিষয়ে জানতে তাদের মোবাইলে কল দেন প্রতিবেদক। এসময় তাদের প্রত্যেকের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও কোনো সংযোগ পাওয়া যায়নি।

মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগনের কর্মীরা বলছে, মোবাইল খোলা রাখলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা লোকেশন ট্রেক করতে পারে। এতে গ্রেপ্তার হতে পারে তারা। মূলত গ্রেপ্তার এড়াতে মোবাইল বন্ধ রাখছে বলে ধারণা তাদের।

পাশিপাশি সিনিয়র নেতারা গ্রেপ্তার হলে বিএনপির চলমান আন্দোলনও ঝিমিয়ে পড়বে বলে মনে করছে নেতাকর্মীরা।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) দিবাগত রাতে রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

পরে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপনের ছয় দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।

এদিকে আমীর খসরুকে গ্রেপ্তার ও রিমাণ্ডে নেওয়ার প্রতিবাদে হরতাল ঘোষণা করেছে বিএনপি। সারাদেশে অবরোধের পাশাপাশি রোববার (৫ নভেম্বর) চট্টগ্রামে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি আহ্বান করেছে বিএনপি।

হরতাল শান্তিপূর্ণভাবে সফল করার জন্য চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মী এবং চট্টগ্রামবাসীর সহযোগিতা কামনা করেছেন বিএনপির নেতৃবৃন্দ।

তবে অ্যাম্বুলেন্স, সংবাদপত্রবাহী ও সাংবাদিকদের বহনকারী যানবাহন, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে। পাশাপাশি রোববার ও সোমবার বিএনপির ডাকা দেশব্যাপী দুইদিনের অবরোধ কর্মসূচিও চলমান থাকবে।

হরতাল সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমান, মীর মো. নাছির উদ্দীন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খন্দকার, এসএম ফজলুল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম।

এর আগে গত ২৯ অক্টোবর গুলশানের বাসা থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে যায় ডিবি। পরে তাকে একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। ৩১ অক্টোবর রাতে গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে।

আরএম/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!