কিশোরগ্যাং/ চট্টগ্রামের এই স্কুলছাত্র বাসায় চুরি করে মায়ের সঙ্গে মিলে (ভিডিও)

মাহির আসফাকের বয়স ১৫। পড়াশোনা করে চট্টগ্রাম নগরের মুরাদপুরের একটি স্কুলে— অষ্টম শ্রেণিতে। কিশোর বয়সেই চুরি করতে শুরু করে শুধুমাত্র বন্ধুদেরকে নিয়ে ‘ফূর্তি’ করার জন্য। তার এই স্বভাব মা-বাবারও অজানা নয়।

বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকালে বায়েজিদ থানার কয়লা ঘর এলাকার ‘মা নিবাস’ নামের একটি ভবনে চুরির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মা ও ছেলেকে গ্রেপ্তার করার পর বেরিয়ে আসে কিশোর অপরাধের অজানা সব তথ্য।

বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমান খন্দকার জানান, গত শুক্রবার মাহির (১৫) এবং তার মা পারভিন আক্তার (৩৫) বায়েজিদ থানার কয়লা ঘর এলাকার ‘মা নিবাস’ নামের একটি ভবনে বাসা ভাড়া নেওয়ার জন্য যান। শুক্রবার লোকজন নামাজ পড়তে যাওয়ায় ওই বিল্ডিং প্রায় ফাঁকা ছিল। এই সুযোগে মা ও ছেলে বিভিন্ন বাসায় ঢুকে ঢুকে বাসা দেখছিল। একপর্যায়ে মাহির সুযোগ বুঝে বিল্ডিংয়ের এক বাসা থেকে ডিএসএলআর ক্যামেরা ও মোবাইল সেট চুরি করে নিয়ে যায়। চুরির ঘটনায় থানায় মামলা হলে পুলিশ মা ও ছেলেকে সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃত মাহিরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে চুরি করার পর জিনিসগুলো বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করে দেয়। আর বিক্রি করা টাকা সে বন্ধুদের নিয়ে খরচ করে ফেলে। মাহিরের মা ছেলের চুরির ব্যাপারে কিছুই জানে না বললেও ভিডিওতে মায়ের সহযোগিতায় ছেলে চুরি করছে— এমনটি দেখা গেছে।

ওসি বায়েজিদ জানান, গ্রেপ্তার হওয়া মাহির অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছে। আর তার মা পারভিন আক্তার নগরের একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন।

ঘটনার বিবরণ দিয়ে মামলার বাদি সাকিবুল আলম বলেন, ‘আমি যখন শুক্রবারে জুমার নামাজ পড়তে যাই, তখন আমাদের বাসায় আমার মা ছিল। এমন সময় বাসা দেখার জন্যে তারা (মাহির ও পারভিন আক্তার) ঢুকে বাসার চারদিকে ঘুরে ঘুরে দেখে। এর এক পর্যায়ে ছেলেটা (মাহির) আমার মোবাইল ও ক্যামেরা নিয়ে ঘর থেকে আগে বের হয়ে যায়। যখন আমি নামাজ পড়ে বাসায় আসি তখন আমি আমার মোবাইল ও ক্যামেরা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। অনেক খোঁজাখুজির পর না পাওয়ায় আমাদের বাসার সামনে ১০ তলা বিল্ডিংয়ের সিসিটিভি ফুটেজ চেক করলে এদের চুরির বিষয়টি ধরা পড়ে। তখন আমি ফুটেজসহ পুলিশকে জানালে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।’

এদিকে চট্টগ্রাম প্রতিদিনের অনুসন্ধানে জানা যায়, মাহির আসফাক চকবাজারের কথিত যুবলীগ নেতা র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া নুর মোস্তফা টিনুর অনুসারী। চট্টগ্রাম নগরে কিশোর গ্যাং পরিচালনাকারীদের অন্যতম হিসেবে নুর মোস্তফা টিনুর নাম পুলিশের তালিকায় উঠেছে ইতিমধ্যে। মাহির আসফাকের ফেসবুক টাইমলাইনে গিয়ে দেখা গেছে, গত ৮ অক্টোবর সে এক পোস্টে লিখেছে—
‘নুর মোস্তফা টিনু আজকে সন্ত্রাস কেন জানেন চকবাজার এ জামাত-শিবির এর বিরুদ্ধে প্রথম যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল তাই।। চট্টগ্রাম কলেজ,মহসীন কলেজ এ আজ যারা ছাত্রলীগ করেন বলে দাবী করেন তারা কি এই টিনু ভাই এর অবদান অস্বীকার করতে পারবেন? অবশ্য করতেও পারেন অস্বীকার কারন বাঙ্গালিতো বেঈমান জাতি।। টিনুরা যদি কোন মন্ত্রী,এমপি,মেয়র এর ছেলে হত তাহলে ওদের সন্ত্রাসী হতে হত না,জামাত-শিবির এর বিরুদ্ধেও কোন সংগ্রাম করতে হতো না।। এসি রুমে বসে আর বিলেতে পড়ালেখা করে এসে খুব সহজে গাড়িতে পতাকা লাগিয়ে ঘুরতে পারত।। হয়ে যেত শিক্ষিত নেতা।।
অবশেষে বলব যদি এই টিনুদের বাঁচিয়ে রাখা হয় তাহলে ঠিক দলের দুঃসময়ে এরাই দলকে বাঁচিয়ে রাখবে।। সুসময়ের কোকিল রাও থাকবে না এসি রুমে বসে থাকা নেতারাও থাকবে না।।’

এইচটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!