কর্ণফুলী টানেল উদ্বোধন, ‘সকাল থেকে বসে আছি শেখ হাসিনাকে দেখার জন্য’

মাথার উপর কড়া রোদ। চারিদিকে জমসমুদ্র। নেই কোনো ছায়া। প্রকৃতিতে আজ নেই কোনো বাতাসও। এই প্রতিকূলতার পরও কড়া রোদে আনোয়ারার কেইপিজেড মাঠে বসে আছেন ৪৫ বছরের রাবেয়া খাতুন।

সকাল ৮ টা থেকে কেইপিজেড মাঠে উপস্থিত আছেন তিনি। এত কষ্ট করে কেন এখানে? উত্তরে রাবেয়া বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে’ একটু দেখবো, তাই।

শুধু রাবেয়া নন, রাবেয়ার মতো অন্তত কয়েক হাজার মহিলা উপস্থিত হয়েছেন কেইপিজেড মাঠে। আর নারীদের উপস্থিতির কথা মাথায় রেখে আলাদা বসার ব্যবস্থা করেছেন আয়োজকরা। এছাড়াও মহিলাদের জন্য সভাস্থলে প্রবেশের আলাদা গেইটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

শনিবার (২৮ অক্টোবর) আনোয়ারা উপজেলার কেইপিজেড মাঠে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জনসভা।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আয়োজকদের দাবী অন্তত ৫ লাখ মানুষের উপস্থিতি ঘটেছে। আর এতে পুরুষদের পাশাপাশি উপস্থিত হয়েছেন বিপুল সংখ্যক নারী।

আনোয়ারা ছাড়াও আশেপাশের পটিয়া, বাঁশখালী, কর্ণফুলী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও চট্টগ্রাম নগর থেকে নারীরা এসেছেন জনসভায়।

এর আগে শনিবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ১১ টার দিকে হেলিকপ্টারে করে পতেঙ্গায় নেভাল হেলিপ্যাডে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেলা ১২টার একটু আগে চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা প্রান্তে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেলের ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে টোল দিয়ে গাড়িতে করে টানেল পার হন সরকারপ্রধান।

উদ্বোধন শেষে আনোয়ারা উপজেলার কেইপিজেড মাঠে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী। জনসভার মাঠ শনিবার সকাল থেকেই ভরে উঠেছে কানায় কানায়। সকাল নয়টার দিকে জনসভা শুরু হয়েছে। সভায় আনোয়ারা, কর্ণফুলী, পটিয়া, বাঁশখালীসহ উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগরের বিভিন্ন স্থান থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে যোগ দেন।

দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশে প্রথম সুড়ঙ্গপথ এই টানেল। এটি চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থেকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে আনোয়ারা উপজেলাকে যুক্ত করেছে। ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সাগর উপকূল ঘিরে শিল্পের নতুন দুয়ার খুলে যাচ্ছে। রোববার সকাল ৬টা থেকে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের নভেম্বরে অনুমোদন পায় প্রকল্পটি। প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা।

২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিং টানেল প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজ উদ্বোধন করেন। ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দ্বিতীয় টিউবের বোরিং কাজ উদ্বোধন করেন।

চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ সুদে এ প্রকল্পের জন্য ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা ঋণ দেয়। বাকি টাকার জোগান দেয় বাংলাদেশ সরকার। চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি টানেলটি নির্মাণ করছে।

আরএম/বিএস/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!