করোনায় বদলে যাওয়া খেলার মাঠগুলো যেন ঘাসভূমি

করোনার তাণ্ডব বদলে দিয়েছে সব কিছু। এতোদিন প্রকৃতির ওপর রীতিমতো মোড়লগিরি করেছিল শিক্ষিত মানুষ। বিজ্ঞানের কিছু আবিষ্কারের বদৌলতে ভেবে নিয়েছিল গোটা পৃথিবীর একমাত্র মালিক সে নিজেই। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনা সে ধারণা ভেঙে দিয়েছে। তিন মাসের অচলায়তনে স্থবির হয়ে পড়েছে চলমান অনেক কিছুই।

করোনার স্থবিরতা ছুঁয়েছে দেশের ক্রীড়াঙ্গনকেও। করোনার কারণে দীর্ঘ ৩ মাসেরও বেশি সময় ধরে পর্যটন জেলা কক্সবাজারে বন্ধ সকল ধরনের খেলাধুলা। স্টেডিয়াম কিংবা খেলার মাঠে নেই খেলোয়াড়দের পদচারণা। কক্সবাজারের সব স্টেডিয়াম ও খেলার মাঠের চেহারা যেন বদলে গেছে। যেসব জায়গা ফুটবল, ক্রিকেট কিংবা ভলিবল খেলোয়াড়দের পদচারনায় মুখরিত থাকতো এখন সেসব জায়গা প্রকৃতির দখলে।

মঙ্গলবার (৩০ জুন) সকালে সরেজমিনে কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে গিয়ে এমনই চিত্র দেখা গেছে৷ স্টেডিয়ামজুড়েই মাঠে এখন ঘাস আর ঘাস। মাঠের বেশিরভাগ অংশ ঘাসে ভরে গেছে। খেলাধুলা না থাকায় মাঠের এ দুরবস্থা। আবার কবে নাগাদ খেলোয়াড়রা মাঠে আসতে পারবেন তারও কোন নিশ্চয়তা নেই। করোনা সংকটে অন্যান্য সেক্টরের মত ক্রীড়াঙ্গনেও নেমে এসেছে নিস্তব্ধতা।

তবে অন্যান্য সেক্টরের অনেকে রাষ্ট্রীয় এবং বিভিন্ন পর্যায় থেকে সুযোগ সুবিধা পেলেও খেলোয়াড়রা তেমন কোনও সুযোগ সুবিধা পাননি বলে জানান ক্রীড়ামোদিরা।

এদিকে, কর্তৃপক্ষের দাবি করোনা সংকটে সরকারি বেসরকারি এবং ব্যাক্তিগতভাবে সাধ্যমত ক্রীড়াবিদদের সহায়তা করা হয়েছে।

আলাপকালে কক্সবাজার জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য এবং ক্রিকেট সম্পাদক জসিম উদ্দিন বলেন, এক সময় মাঠে ঘাস সৃষ্টির জন্য অনেক টাকা বাজেট করতে হতো। আর এখন মাঠ ভর্তি ঘাস। এই অবস্থার সৃষ্টি মূলত মাঠে খেলাধুলা না থাকায়।

তিনি জানান, বাংলাদেশে মার্চের মাঝামাঝি করোনা সংকট শুরু হওয়ার পর থেকেই কক্সবাজার বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন স্টেডিয়ামে সব ধরনের খেলাধুলা বন্ধ। খেলোয়াড়রা মাঠে আসেন না। তাই মাঠে এখন ঘাসে ভরপুর।

জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য এম আর মাহবুব বলেন, শুধু জেলা বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন স্টেডিয়াম নয়, ফুটবলের উর্বর ভুমি চকরিয়া, রামুসহ সব জায়গাতেই কোনও ধরণের খেলাধুলা নেই। খেলোয়াড়রা এখন ঘরে বসে আছেন।

মূলত করোনা সংকটের কারণে সব জায়গায় খেলাধুলা বন্ধ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জেলার অনেক খেলোয়াড় জাতীয় ফুটবল দলে এবং বিভিন্ন ক্লাবে ২০/৩০ লাখ টাকা দিয়ে দল বদল করেছিলেন। কিন্তু মাঠে খেলা না থাকায় কেউ এখন টাকা পাচ্ছেন না, খেলতেও পারছেন না। অপরদিকে খেলার মাঠগুলো ময়লা আবর্জনা এবং ঘাসে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

জেলা খেলোয়াড় সমিতির সমন্বয়ক সাবেক জেলা ফুটবল দলের অধিনায়ক ইসমাইল জাহেদ বলেন, কক্সবাজারে প্রায় ৫ শতাধিক ফুটবলার আছেন। যারা নিয়মত পেশাদার ফুটবল খেলেন কিন্তু গত ৪ মাসে করোনা সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে কোন খেলোয়াড় মাঠে যাননি। কোন খেলা বা লীগ এমনকি টুর্নামেন্ট হয়নি তাই কোন খেলোয়াড় একটা টাকাও আয় করতে পারেননি। আর মাঠের অবস্থাও শোচনীয়।

কক্সবাজার জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন বলেন, মাঠে ঘাস তুলতে আমাদের রীতিমত হিমসিম খেতে হতো সেই মাঠে এখন ঘাস আর ঘাস। করার কিছুই নেই মাঠে খেলাধুলা না থাকায় ঘাসে ভরে গেছে। আর করোনা সংকটে সরকারি বেসরকারি এবং ব্যাক্তিগতভাবে ক্রীড়াবিদদের সহায়তা করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!