এবার ৭১৩, চট্টগ্রামে করোনা ভাঙছে রেকর্ডের পর রেকর্ড

করোনা শনাক্তে চট্টগ্রাম ভাঙছে রেকর্ডের পর রেকর্ড। ২০২০ সালের এপ্রিলে চট্টগ্রামে করোনা শনাক্তের পর চলতি বছরের জুলাই মাসেই পাঁচবারের মতো করোনা তার রেকর্ড ভেঙেছে। সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়িয়ে গেল অতীতের সব রেকর্ড। এই সময়ে চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো শনাক্ত ছাড়িয়ে গেল সাতশর ঘর। নতুন শনাক্ত ৭১৩ জনের মধ্যে ৪৭৭ জন নগরের এবং ২৩৬ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। একই সময়ে চট্টগ্রামে করোনা কেড়ে নিয়েছে আরও ৯ জনের প্রাণ। তাদের মধ্যে ৭ জনই উপজেলার, বাকি ২ জন নগরের।

এ নিয়ে চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত রোগী গিয়ে দাঁড়াল ৬২ হাজার ৯১৩ জন। এদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর ৪৮ হাজার ৭৭২ জন। আর বিভিন্ন উপজেলার ১৪ হাজার ১৪১ জন। এদের মধ্যে না ফেরার দেশে চলে গেছেন ৭৪৪ জন। এদের মধ্যে ৪৮৬ জন চট্টগ্রাম নগরের। আর বিভিন্ন উপজেলায় মারা গেছেন ২৫৮ জন।

বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি ৯টি ও কক্সবাজারের ১টি ল্যাবে ২ হাজার ১০৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে ৭১৩ জনের নমুনায় করোনা পজিটিভ আসে। শনাক্তের হার প্রায় ৩৫ শতাংশ।

এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে করোনা পজিটিভ আসে ৭৫ জনের শরীরে। এদের মধ্যে ৪৯ জন নগরের এবং ২৬ জন চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৬৪৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে করোনার উপস্থিতি মিলে দিনের সর্বোচ্চ ১৪৯ জনের দেহে। এদের মধ্যে নগরের ৯৯ জন এবং বিভিন্ন উপজেলার ৫০ জন।

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ১৭৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ৬২ জনকে করোনার জীবাণু বাহক হিসেবে শনাক্ত করা হয়। এদের মধ্যে নগরের ৫৬ জন। বাকি ৬ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ১৬০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে ৫৩ জনের দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া যায়। যাদের মধ্যে ৩১ জন নগরের অধিবাসী, বাকি ২২ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) ৩৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে ২৫ জনের করোনা পজিটিভ আসে। তাদের মধ্যে ১৮ জনই নগরের, ৭ জন উপজেলার।

এছাড়া, নগরীর বিভিন্ন ল্যাবে এন্টিজেন টেস্ট করানো হয় ৪৭৬টি নমুনা। তাতে করোনা পজিটিভ আসে ১৮৪ জনের। এর মধ্যে ৭৮ জন নগরের এবং ১০৬ জন বিভিন্ন উপজেলার।

নগরীর বেসরকারি করোনা পরীক্ষাগারের মধ্যে ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২২ জনের নমুনা পরীক্ষা করানো হয়। তাতে ৪৪ জনের দেহে ভাইরাসের জীবাণু পাওয়া যায়। যাদের মধ্যে ৪০ জনই নগরের, ৪ জন উপজেলার। শেভরণ ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ১৮২টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪৫ জন করোনা পজিটিভ রোগীর খোঁজ মিলে। যাদের ৩৮ জন নগরের এবং ৭ জন বিভিন্ন উপজেলার। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ৩৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৫ জন করোনা রোগীর হদিস পাওয়া যায়। যাদের ১৮ জন নগরের, ৭ জন উপজেলার। ইপিক হেলথ কেয়ারে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫২ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এদের মধ্যে ৪৫ জনই নগরের, বাকি ৭ জন উপজেলার।

এদিন, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল সেন্টার ল্যাবে করোনার কোন নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি।

কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের ৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু সেগুলোতে করোনো নেগেটিভ আসে।

উপজেলায় করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শনাক্ত রোগী পাওয়া যায় হাটহাজারীতে। সেখানে ৫৮ জনের দেহে ভাইরাসটির জীবাণু পাওয়া যায়। এছাড়া, সীতাকুণ্ডে ৩৩ জন, রাউজানে ২৭ জন, ফটিকছড়িতে ২০ জন, মিরসরাইয়ে ১৭ জন, সন্দ্বীপে ১৫ জন, বোয়ালখালীতে ১৪ জন, চন্দনাইশে ১৩ জন, সাতকানিয়ায় ১২ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৯ জন, লোহাগাড়ায় ৭ জন, আনোয়ারায় ৬ জন এবং বাঁশখালীতে ৫ জনকে করোনার জীবাণু বাহক হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!