আরও একটি দুর্ভোগের দিন শহরে, বৃষ্টিই খলনায়ক

দিনভর ৮৯.৩ মিলিমিটার রেকর্ড বৃষ্টিপাত

সপ্তাহ ব্যবধানে তিনবার ডুবলো চট্টগ্রাম নগর। শনিবার ভোর ছয়টা থেকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত ৮৯ দশমিক তিন মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এতে নগরীর লাইফলাইন খ্যাত এশিয়ান হাইওয়ের বিশাল একটা অংশ কোমর সমান পানির নিচে ডুবে ছিল। স্রোতের তোড়ে ভেসে যাওয়ার শঙ্কা থেকে রাস্তার পাশে রশি বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। রশি ধরে রাস্তা পারাপার হয়েছেন পথচারীরা। ওয়াসার খোঁড়াখুড়ি এবং সড়কের বিটুমিন সরে তৈরি হওয়া গর্তে পড়ে যানবাহন বিকল হওয়ায় অনেকেই ভোগান্তিতে পড়েন। আবার বৃষ্টিতে পরিবহন সংকটের ভোগান্তি তো ছিলই।

বহদ্দারহাট, পাঁচলাইশ, মুরাদপুর, ষোলশহর ২নং গেইট, অক্সিজেন, চকবাজার, প্রবর্তক মোড়, মেহেদীবাগ, এমএম আলী রোড, আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড়, কমার্স কলেজ এলাকা, এক্সেস রোড, সিডিএ আবাসিক, শান্তিবাগ আবাসিক, হালিশহর, সল্টগোলা, খাতুনগঞ্জ, চাক্তাই, মাস্টারপুল, বাকলিয়ার পাশাপাশি চান্দগাঁও আবাসিক, নাসিরাবাদ আবাসিক এবং জাকির হোসেন রোডেও জলাবদ্ধতার ভোগান্তি ছিল।

চট্টগ্রাম নগরীর কাতালগঞ্জ এলাকায় জলাবদ্ধতা। ফেসবুক থেকে নেওয়া ছবি।
চট্টগ্রাম নগরীর কাতালগঞ্জ এলাকায় জলাবদ্ধতা। ফেসবুক থেকে নেওয়া ছবি।

জাকির হোসেন রোডের ব্যবসায়ী মো. সেলিম উল্লাহ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এই সড়কে আমার অবস্থান প্রায় বিশ বছর। আমি কখনো এখানে পানি জমতে দেখিনি। এই প্রথম দেখলাম জাকির হোসেন রোডে পানি জমলো।’

চট্টগ্রাম ওমেন কলেজের শিক্ষার্থী সাবিকুন্নাহার বলেন, ‘সকালে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে আমরা কলেজে প্রবেশ করি। কলেজ থেকে বের হয়ে দেখি রাস্তায় পানি। বিশ টাকার রিক্সা ভাড়া আশি টাকায় গোলপাহাড় মোড় আসি।’

আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিকের এক ভবন মালিক আনিসুর রহমান চৌধুরী জানান, ‘বাড়ির নিচতলায় গত তিন বছর ভাড়াটিয়া নেই। মহেশখালে বাঁধ দেওয়ার পর টানা পানির নিচে ছিল সিডিএ আবাসিক এলাকা। তখনই অনেক বাড়ির নীচতলা পরিত্যক্ত হয়েছে। এরপর রাস্তাগুলো উঁচু করায় অনেক বাড়ির নিচতলা এখন রাস্তা থেকে নিচে।’

চট্টগ্রাম নগরীর বাদুরতলায় পানি ঢুকে পড়েছে বাসাবাড়িতে। ফেসবুক থেকে নেওয়া ছবি।
চট্টগ্রাম নগরীর বাদুরতলায় পানি ঢুকে পড়েছে বাসাবাড়িতে। ফেসবুক থেকে নেওয়া ছবি।

শান্তিবাগের সুজন বড়ুয়া বলেন, ‘আমাদের এলাকায় শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ বেশি। তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়েছে হালকা বৃষ্টি মাথায় নিয়ে। ঘরে ফিরার সময় কোমর থেকে বুক পরিমাণ পানি।’

চান্দগাঁও আবাসিকে বাসিন্দা শাহেদ সরোয়ার বলেন, ‘সকালে কর্মস্থলে গেলাম ভালো। বিকেলে বাসায় ফিরে দেখি বাসায় পানি! ফ্রিজ, সোফা, খাটসহ নানান জিনিষ নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।’

পূর্ববাকলিয়ার আরিফুল হক টিপু বলেন, ‘চারপাশে পানি আর পানি। ঘর থেকে বের হওয়ার কোন উপায় নেই। পানিতে ঘর-গৃহস্থলির সরঞ্জাম সব নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।’

চাক্তাইয়ের শুঁটকি ব্যবসায়ী নুরুল মোস্তফা জানান, ‘বৃষ্টিতে আমরা দোকানের মালামাল নিরাপদেই রাখি। তবে আজ অতিরিক্ত পানি জমেছে এবং দীর্ঘস্থায়ী ছিল। কারো কারো মালামাল পানিতে ভিজেছে।’

এফএম/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!