চট্টগ্রামে সিগারেটের নকল ব্যান্ডরোল এনে ১৪৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা

আন্দরকিল্লার বাপ্পু এন্টারপ্রাইজের প্রতারণা ধরা কাস্টমসে

চীন থেকে সিগারেটের নকল ব্যান্ডরোল এনে ১৪৩ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির দেয়ার চেষ্টা করেছে চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বাপ্পু এন্টারপ্রাইজ। শুধু তাই নয়, নকল ব্যান্ডরোল আনা হয় কাগজ ঘোষণায়। তবে, তার ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা নস্যাৎ করে দিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস।

আমদানিকারকের চালান কায়িক পরীক্ষা করতে গিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের অডিট, ইভেস্টিগেশন এন্ড রিসার্চ (এআইআর) টিমের কাছে ধরা পড়ে চক্রটি। এ চালানে আনা জাল স্ট্যাম্প তিন কোটি উনিশ লক্ষ আশি হাজার পিস সিগারেটের প্যাকেটে ব্যবহার করা যেতো। এর মাধ্যমে সরকার প্রায় ১৪৩ কোটি টাকা রাজস্ব হারাতো।

জানা গেছে, চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লাস্থ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বাপ্পু এন্টারপ্রাইজ চীন থেকে আর্ট পেপার ঘোষণায় এক কন্টেইনার পণ্য আমদানি করে। পণ্যচালানটি খালাসের লক্ষ্যে গত ৯ ডিসেম্বর সিএন্ডএফ এজেন্ট মধুমতি এসোসিয়েটস লিমিটেড কাস্টমসে বিল অব এন্ট্রি (নং-সি-১৯৯১৯২৪) দাখিল করে।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অডিট, ইভেস্টিগেশন অ্যন্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখায় জানায়, পোর্ট কন্ট্রোল ইউনিট (পিসিইউ) ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার আওতায় রপ্তানিকারক, রপ্তানিকারকের ওয়েবসাইট, তৈরি দেশ, আমদানিকারকের ব্যবসায়ের ধরণ ও ঠিকানা, পণ্যের বর্ণনা প্রভৃতি বিশ্লেষণ করে পণ্যচালানটিতে মিথ্যা ঘোষণার পণ্য থাকতে পারে বলে ধারণা করেন। ফলে পণ্যচালানের বিল অব এন্ট্রি লক করা হয়।

লককৃত পণ্যচালানটি ১৪ ডিসেম্বর কন্টেইনার নামিয়ে কায়িক পরীক্ষায় পাঁচটি প্যালেটে শুধুই আর্ট পেপার পাওয়া যায়। পরের একটি প্যালেটে সিগারেটের জাল স্ট্যাম্প খুঁজে পায়। সর্বমোট ২৪৬ প্যাকেট প্রতি প্যাকেটে ২৬০ বান্ডিল এবং প্রতি বান্ডিলে ৫০০ পিস হিসেবে সর্বমোট ৩ কোটি ১৯ লক্ষ ৮০ হাজার পিস হালকা খয়েরী রংয়ের জাল স্ট্যাম্প পাওয়া যায়। যা ১০ শলাকাবিশিষ্ট সিগারেটের প্যাকেটে ব্যবহারের উপযোগী।

উল্লেখ্য, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আইন অনুযায়ী স্ট্যাম্প বা ব্যান্ডরোল ‘দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ’ হতে সংগ্রহ করতে হয়। ফলে এই জাতীয় পণ্য দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ ব্যতীত অন্য কোন প্রতিষ্ঠান হতে ক্রয় অথবা বিদেশ থেকে আমদানি করার কোন সুযোগ নেই।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অডিট, ইভেস্টিগ্রেশন এন্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার ডেপুটি কমিশনার মোহাম্মদ শরফুদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, বড় জালিয়াতি করেছে আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান মিলে। একে তো মিথ্যা ঘোষণা তার উপর নকল ব্যান্ডরোল বা ট্যাক্স স্টাম্প আমদানি। দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে প্রচলিত অন্যান্য আইন ও বিধি অনুযায়ী কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!