অবৈধ দোকানের আড়ালে ছিনতাই চক্রের বড় আস্তানা ফৌজদারহাট রেলগেটে

ফৌজদারহাট জলিল আবাসিকের রেলগেট সংলগ্ন এলাকায় রেলের জায়গা দখল করে চলছে রমরমা ব্যবসা। রেলের কোটি টাকার জায়গা দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে ঝুপড়ি দোকান। আর এসব দোকান চোর-ছিনতাইকারীদের নিরাপদ আস্তানায় পরিণত হয়েছে।

গতবছর অভিযান চালিয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল এসব দোকানপাট ও রেল লাইন সংলগ্ন অবৈধ বাজার উচ্ছেদ করে। উচ্ছেদ করে যেতে না যেতেই আবারো দখল হয়ে যায় এসব জায়গা। আর এই দখলের নেপথ্যে রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উচ্ছেদের পর স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ও জিআরপি পুলিশের কিছু অসাধু সদস্য মিলে এখানে আবারো দোকান তৈরি করে। এরপর নির্দিষ্ট পরিমাণের টাকার বিনিময়ে ভাড়া দেওয়া হয় এগুলো। আর এসব দোকানগুলোতে ছিনতাইকারী থেকে শুরু করে ছিচকে চোরদের আড্ডা বেশি। দোকানের আশপাশে চলাচল করা পথচারীদের টার্গেট করে সুযোগ বুঝে হাতিয়ে নেয় মোবাইল ফোন-টাকাসহ মূল্যবান সব জিনিস।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম নগরীর সুগন্ধার বাসিন্দা হায়দার (২৫) নামের এক ব্যক্তি ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে সবকিছু হারান। ওইসব দোকান থেকে ছিনতাইকারীরা বের হয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার টাকা ও মোবাইলফোন কেড়ে নেয়।

এছাড়া জিআরপি পুলিশের সহায়তায় রেল লাইন সংলগ্ন অবৈধ বাজারও বসানো হয়। এরপর তাদের কাছ থেকে দৈনিক টাকা নেওয়া হয়।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, জলিল আবাসিকে রেলের জায়গায় অবৈধ দোকানপাট ও বাজার গড়ে উঠেছে। ৩ এবং ৪ নম্বর রেল লাইনের মাঝখানে বসেছে এই বাজার। ট্রেন এলে এখানে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাজারের এক দোকানি বলেন, রেলের পুলিশকে দৈনিক টাকা দিয়ে বাজারে বসার সুযোগ পাই।

রেলগেট এলাকার বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব কবীর আহমেদ বলেন, প্রতিদিন কেউ না কেউ এখানে ছিনতাইয়ের শিকার হন৷ বিশেষ করে নতুন লোকজন দেখলেই আজিজ, মানিক, ইউসুফ সওদাগরের দোকানে বসে টার্গেট ঠিক করে ছিনতাইকারীরা। পরে সুযোগ বুঝে সব ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয় মদদদাতাদের গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে আবার ফিরে আসে। এদের অত্যাচারে জলিল আবাসিকের কয়েক হাজার বাসিন্দা অতিষ্ঠ হয়ে গেছে।

ফৌজদারহাট স্টেশন মাস্টার রতন কান্তি দাশ অবৈধ দখলের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,আমি অবৈধ দখল পুনরায় উচ্ছেদ করতে চিঠি দিয়েছি।

অভিযোগের বিষয়ে জিআরপি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজিম উদ্দীন বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।

বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (পূর্ব) মোস্তফা ইমরান বলেন, ট্রেন চলাচলের লাইনে বাজার সম্পূর্ণ অবৈধ। বাজার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা মাহবুব উল করিম বলেন, গতবছর এসব অবৈধ দোকান ও স্থাপনা আমরা উচ্ছেদ করেছি। কিন্তু আবারো দোকান বসেছে বলে শুনেছি। শিগগির উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, রেলের জায়গা দখলমুক্ত করতে ভূসম্পত্তি কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!