‘অনুগতদের’ পদোন্নতি দিয়ে আবারও বিতর্কে সিডিএ চেয়ারম্যান ছালাম

১০ বছর পর ৮০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদোন্নতি

অবশেষে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে পদোন্নতি দিতে বাধ্য হলেন বিদায়ী চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম। এ নিয়ে তৈরি হয়েছে আরেক বিতর্ক। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) চউকের বোর্ড সভায় এসব কর্মকর্তা কর্মচারীদের পদোন্নতির অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকে অভিযোগ করেছেন, বিদায়ের মাত্র তিনদিন আগে চেয়ারম্যান তার ঘনিষ্ঠজনদেরই পদোন্নতি দিয়েছেন। এ কারণে কাদের কাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, তাও প্রকাশ করা হয়নি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চউকের বোর্ড মেম্বার কেবিএম শাহজাহান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, আমরা আজকের বোর্ড সভায় যোগ্যতা ও প্রাপ্যতার ভিত্তিতে ৮০ জনের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পদোন্নতি দিয়েছি। এক্ষেত্রে নিয়মের বাত্যয় ঘটানো হয়নি। বিতর্ক হবে এমন কাউকেও পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া, ধারাবাহিকভাবে অন্যদেরও পদোন্নতি দেওয়া হবে।

চউক কর্মচারী লীগের সভাপতি নাসির খান বলেন, গত দশ বছর ধরে চউকের কোন কর্মকর্তা কর্মচারীকে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে কেউ প্রতিবাদ করলেই চউকের বদলিসহ নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। তাই দীর্ঘদিন আমরা মুখ বুজে সহ্য করেছি। সর্বশেষ গত ৯ এপ্রিল থেকে পদোন্নতিসহ ৫ দফা দাবিতে আমরা আন্দোলনে নামি। আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১০ এপ্রিল কর্মবিরতি চলা অবস্থায় চউক চেয়ারম্যানের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কর্মসূচি স্থগিত করি। এরই অংশ হিসেবে আজ আমাদের বেশ কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তবে বিস্তারিত না জানা পর্যন্ত এ বিষয়ে মন্তব্য করা যাবে না। বিস্তারিত জানার পর আমরা সাংগঠনিকভাবে সিদ্ধান্ত নেবো পরবর্তীতে কী করা হবে।

কর্মচারী লীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠজনদেরই পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এ কারণে কাদের কাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, তা প্রকাশ করা হয়নি। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলন ঠেকানোর জন্য কৌশলে পদোন্নতি দেওয়া হলেও তা নিয়ে রহস্যজনক লুকোচুরির আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ১০ এপ্রিল চউক ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পদোন্নতির দাবিতে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করে। ওই দিন সকাল ১০টা থেকে বেলা দুটা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করা হয়। পরবর্তীতে চউক চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠকের দু-এক দিনের মধ্যে পদোন্নতি দেওয়ার আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। তখন কর্মসূচির অংশ হিসেবে চউকের বিভিন্ন জায়গায় পাঁচটি দাবি সম্বলিত ব্যানারও টাঙানো হয়। এতে উল্লেখ ছিল, গত ১০ বছর ধরে ঝুলে থাকা কর্মকর্তা কর্মচারীদের পদোন্নতি সম্পন্ন করতে হবে। কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য অবসরজনিত পেনশন ভাতা প্রদানের জন্য ১০ কোটি টাকার পৃথক ফান্ড সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। চউকের ৪৩৪তম বোর্ড সভা বাতিল ও স্থগিত করতে হবে। পদোন্নতি না হওয়া পর্যন্ত সকল পদের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রাখতে হবে। দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত চউকের কোনো কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!