শাহাদাত কখন দিচ্ছেন ভোট বর্জনের ঘোষণা— উৎসুক জনতা অপেক্ষায়

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের মধ্য দিয়ে শুরু, এরপর থেকে সব ধরনের জাতীয় কিংবা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ক্ষেত্রে দেখা গেছে একই চিত্র। ভোটের মাঝপথে নির্বাচন বর্জন।

অল্প দুই একটি ব্যতিক্রম ছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলেও ভোটের কয়েকদিন আগে থেকে তাদের কর্মী-সমর্থকদের গণগ্রেপ্তার ও মামলা-হামলায় হয়রানি করার অভিযোগ করে ভোটের দিন মাঝপথে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়া যেন ৪ মেয়াদে সরকার গঠন করা এই দলটির বৈশিষ্ট্য হয়ে গেছে।

এবারের চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে বিএনপি। দলটির নগর কমিটির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাৎ হোসেন এবারের চসিক নির্বাচনে দলটির হয়ে মেয়র পদে লড়ছেন। অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে দূর্বল সাংগঠনিক অবস্থান নিয়েই এবারের চসিক নির্বাচন লড়ছে তারা। তবে এখন পর্যন্ত নির্বাচনে দলটির অবস্থান গত ৬ বছরের সকল নির্বাচনের মতই। কাজেই এবারও ভোটারদের বড় একটা অংশের সবচেয়ে বড় আগ্রহের জায়গাটি হচ্ছে ভোটের দিন কতক্ষণ নির্বাচনে থাকছে ডা. শাহাদাৎ।

এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে একেক সময়ে একেক অবস্থান দেখিয়ে আসছেন ডা. শাহাদাৎ। মাত্র কয়েকদিন আগেও বলেছেন শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত নির্বাচনে লড়বেন। যদিও অল্প সময়ের মধ্যেই কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিনকে অপসারণ না করলে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর হুমকিও দেন তিনি। তবে নির্বাচন কমিশন তার সেই হুমকিকে খুব একটা আমলে নেয়নি। অথচ ব্যতিক্রম উদাহরণও আছে এই চসিক নির্বাচনেই। পাঠানটুলিতে সরকারদলীয় কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুরের আবেদনের প্রেক্ষিতে আগের ওসি সদীপকে সরিয়ে কোতোয়ালি থেকে ওসি মহসিনকে সেখানে নিযুক্ত করে সিএমপি।

সর্বশেষ বিনা কারণে বিনা মামলায় বিএনপি প্রার্থীর এজেন্টদের গ্রেপ্তারের কথা জানিয়ে তাদের মুক্তির দাবি নিয়ে চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামানের দপ্তরে যান বিএনপি প্রার্থী ডা. শাহাদাৎ। সেখানেও তিনি হাসানুজ্জামানকে বলছিলেন, ‘নির্বাচন থেকে সরেই দাঁড়াই, কী বলেন?’ একদমই চুপচাপ থেকে শাহাদাতের প্রশ্নের অনেক বড় উত্তরও দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

তবে এক্ষেত্রে বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতাকেই মূল কারণ হিসেবে দেখছেন চট্টগ্রামের ভোটাররা। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, এই চসিকেই ২০০৫ সালে ভোটারদের নিয়ে কেন্দ্র ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও করে ভোটারদের অধিকার আদায় করে নেওয়ার উদাহরণ তৈরি করেছিলেন প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন নগর আওয়ামী লীগ। তবে এখন পর্যন্ত নির্বাচনে বিএনপির যে অবস্থা, তাতে এবারের ভোটেও শেষ পর্যন্ত কোনো অর্জন নিয়ে বিএনপি ঘরে ফেরার সম্ভাবনা একেবারে নেই বললেই চলে।

এখন উৎসুক ভোটারদের অপেক্ষা— ঠিক কতক্ষণ ভোটে থাকবেন বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত? কয়টা বাজে দেবেন নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা? হতাশমুখে কখন ডাকবেন জরুরি সংবাদ সম্মেলন?

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!