প্রতিমন্ত্রী তখন চট্টগ্রামের দোকানে দোকানে ঘোরেন, মজুরি ২০০ টাকা
সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ও অভিনেতা সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর গেলেন সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের দফতরে। আসলে এমন দৃশ্যের অবতারণা হয়। আসাদুজ্জামান নূরকে কক্ষে ঢুকতে দেখেই আবেগতাড়িত হলেন প্রতিমন্ত্রী। এগিয়ে গিয়ে পা ছুঁয়ে সালাম করতেই প্রতিমন্ত্রী এনামুরকে বুকে টেনে নেন নূর।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে কেন এই আবেগঘন দৃশ্য— নিজের ফেসবুক পেইজে নেপথ্য কাহিনী তুলে ধরেছেন প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান নিজেই। লিখেছেন তিনি— ‘তখন আমি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ছাত্র। বাবা নেই। মা, চার ভাই, তিন বোন। সন্তানদের মধ্যে আমি সবার বড়। টানাটানির সংসার। তার উপর মেডিকেলের বই পত্র কেনা। অনেক খরচ। শেষমেষ বাড়তি রোজগারের আশায় শিক্ষার্থী অবস্থায় কাজ নিলাম একটা মার্কেট রিসার্চ প্রতিষ্ঠানে। ইস্ট এশিয়াটিক অ্যাডভার্টাইজিং লিমিটেড।’
‘চট্টগ্রাম শহরে দোকানে দোকানে ঘুরি। গোল্ড ফ্লেক সিগারেটের নতুন তিনটা মোড়ক- এর মধ্যে কোনটা বেশি পছন্দের তা নিয়ে জরিপ করি। প্রতিদিনের মজুরি মাত্র ২’শ টাকা। আমার কাজে সন্তুষ্ট হয়ে অল্প কিছুদিনের মাথায় মজুরি বেড়ে দাঁড়াল দিন প্রতি ৪’শ টাকা। জীবনের প্রথম উপার্জন। বেশ চলে যেত। সংসার চালানো থেকে ভাই বোনের লেখাপড়ার খরচ-মোটামুটি চলনসই পর্যায়ে নিয়ে এলাম নিজের পরিবারকে।’
‘সেসময় নূর ভাই ছিলেন ওই কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। এই কথা এজন্য বলছি যে, আজ (বৃহস্পতিবার) অপরাহ্ণে মন্ত্রণালয়ে আমার অফিস কক্ষে এসেছিলেন শ্রদ্ধেয় নূর ভাই। আসাদুজ্জামান নূর। জনপ্রিয় অভিনেতা, সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী এবং নীলফামারী-২ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য। প্রথম দর্শনেই পা ছুঁয়ে সালাম করতেই আমাকে বুকে জড়িয়ে নিলেন তিনি।’
‘বললেন, এনাম তুমি যেভাবে অতীতের কথা মনে করো, এই সময় এমনটা কেউ করে না! সবাই অতীত ভুলে যায়। আচ্ছা। আমি কেন ভুলবো? আমরা অতীতটাই তো আমার অহংকার আর গৌরবের। তাই না!’ লিখেছেন ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) আসনের সংসদ সদস্য প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান।
সিপি