১০ হাজার লিটার দুধ প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে পটিয়ায়

ডেইরি ও পোল্ট্রি খামারিদের দুর্দিন

করোনাভাইরাসের প্রভাবে পটিয়ার দুগ্ধ খামারের উৎপাদিত দুধ বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে। এতে উপজেলার প্রায় ৪ শতাধিক খামারি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

পটিয়া প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পটিয়ায় প্রতিদিন ২০ হাজার লিটার দুধ উৎপাদন হয়ে থাকে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সবখানে চলছে অঘোষিত লকডাউন। যে কারণে বেকারি, মিষ্টির দোকান ও চায়ের দোকান বন্ধ রয়েছে। ফলে প্রতিদিন অর্ধেক দুধ অবিক্রিত ও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। টানা লোকসানের কারণে এমন ভরা মৌসুমেও খামারিদের মাথায় হাত।

এদিকে করোনাভাইরাসের কারণে দুধ বিক্রয় কমতে থাকায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, জেলা সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে মিলে পটিয়া প্রাণিসম্পদ অফিস প্রচারণায় নেমেছে। বলা হচ্ছে- মাছ, মাংস, ডিম, দুধ খেলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু সবদিকে কিছু বন্ধ থাকায়েএমন প্রচার-প্রচারণাও কাজে দিচ্ছে না।

বেশ কয়েকজন খামারির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সপ্তাহখানেক আগে করোনাভাইরাস নিয়ে পটিয়ার বিভিন্ন এলাকায় গুজব ছড়ানোর ঘটনা ঘটে। এই গুজবের কারণে দুধ, ডিম, মাছ, মাংস বিক্রিতে ধস নামে। দুধের দাম লিটারপ্রতি ৫০ থেকে ৩০ টাকায় নেমে আসে। অনেক এলাকায় প্রতি লিটার ২০ টাকায়ও বিক্রি করতে বাধ্য হয় খামারিরা।
তবে প্রশাসন এই গুজব ঠেকাতে পদক্ষেপ নেওয়ায় দুধ, মাছ, মাংস, ডিম বিক্রি কিছুটা বাড়লেও আগের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেনি। প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে দুধ অবিক্রিত থেকে যাচ্ছে। যদিও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পক্ষ থেকে খামারিদের দুধ নষ্ট না করে ক্রিম তৈরিতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে পটিয়া ডেইরি এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এইউএম রাসেল জানান, করোনাভাইরাসের প্রভাবে অফিস, আদালত, যানবাহনসহ হোটেল, রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পটিয়ায় দুধের দাম এবং পোলট্রি মুরগির দাম কমে গেছে। এতে চরম লোকসান গুণতে হচ্ছে খামারিদের। অথচ গোখাদ্য ও পোল্ট্রি খাদ্যের দাম বেড়েছে প্রতিকেজিতে ৫-১০ টাকা।

পটিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জপু চক্রবর্তী জানান, পৌর এলাকাসহ উপজেলার সতেরটি ইউনিয়নে ডেইরি খামার ৪০৮টি, ব্রয়লার খামার ৮৯৪টি, লেয়ার খামার ২৩৬টি, হাঁসের খামার ১৭টি, ছাগলের খামার ৮টি। এসব খামারে প্রায় ৪০ হাজার বিদেশি গাভী রয়েছে। করোনার কারণে সবাই বিপাকে পড়েছেন।

এএল এগ্রো ডেইরি ফার্মের মালিক রবিন দাশ জানান, তার খামারে ১৫টি দুধের গাভি রয়েছে। যা হতে প্রতিদিন গড়ে ১০০ হতে ১৪০ লিটার দুধ উৎপাদন হয়। শহরের হোটেল রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় সময়মতো এই দুধ তিনি বাজারে বিক্রি করতে পারছেনা। এতে করে তাকে প্রতিদিন ছয় থেকে সাত হাজার টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে। তার ছোট খামারে যদি এ অবস্থা হয়, তবে বড় খামারিদের লোকশান আরও বেশি বলে জানান তিনি।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!