হঠাৎ আগুন ছড়িয়ে পড়ল মাঝারি বিমানে! (ভিডিও)
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্ঘটনা মোকাবেলায় মহড়া
ফ্লাইটে ৬৫ যাত্রী নিয়ে এক্সওয়াইজেড নামের মাঝারি একটি উড়োজাহাজ ওমেগা ২৩৪ অবতরণের চেষ্টা করছিল চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। বিমানটি রানওয়ের পূর্ব দিক দিয়ে নামার চেষ্টা করে যাচ্ছিল। অবতরণের পূর্ব মুহূর্তে পাইলট কন্ট্রোল টাওয়ারে জানান, তার উড়োজাহাজের ডান পাশের ইঞ্জিনে আগুন ধরেছে। জরুরি অতরণের জন্য কন্ট্রোলকে পাইলট অনুরোধ জানান।
অবতরণের একপর্যায়ে বিমানটি রানওয়ের বাম পাশে ছিটকে পড়ে। এরপর বিমানের পেছনের অংশ দিয়ে আগুন ধরে যায়। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে বিমানে। এরপর ছুটোছুটি করে শুরু হয় ফায়ার সার্ভিস থেকে শুরু করে বিভিন্ন বাহিনীর উদ্ধার তৎপরতা। আহতদের উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্স ও হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাওয়া হয় বিভিন্ন হাসপাতালে।
না, এ কোনো সত্যিকারের বিমান দুর্ঘটনা নয়। আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা (আইকাও) এর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি দুই বছর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্যোগ মোকাবিলা মহড়া অনুষ্ঠিত হওয়ার নিয়ম রয়েছে। সে প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান দুর্ঘটনা মোকাবেলায় মহড়া অনুষ্ঠিত হল।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ম্যানেজার উইং কমান্ডার এবিএম সারোয়ার-ই-জাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সদস্য (পরিচালনা ও পরিকল্পনা) এয়ার কমডোর মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।
মহড়ায় অংশ নেয় বাংলাদেশ বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, র্যাব, বিএনসিসি, আনসার ও ভিডিপি, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, নৌ বাহিনী হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, মা ও শিশু হাসপাতাল, বেসরকারি ফ্লাইট পরিচালনাকারী বিভিন্ন এয়ালাইন্স।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, বিমানবন্দরে যাত্রী যাতে হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যাপারে কোনো ধরনের আপস নয়। নিরাপত্তা বিঘ্নকারীদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। বিমানবন্দরে কর্মরত সকল সংস্থার কর্মীদের একথা মনে রাখতে হবে যে, বিমানবন্দরের নিরাপত্তার সঙ্গে দেশের ভাবমূর্তি জড়িত।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সুপরিসর কার্গো এপ্রোন নির্মাণ, অত্যাধুনিক রাডার স্টেশন স্থাপন, যোগাযোগ যন্ত্রাংশের আধুনিকায়ন এবং নিরাপত্তার জন্য অত্যাধুনিক নিরাপত্তা যন্ত্র সংস্থাপন করা হয়েছে। যাত্রীদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করার জন্য চট্টগ্রাম শহর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের আধুনিকায়নের জন্য রানওয়ের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি, প্যারালাল ট্যাক্সিওয়ে, টার্মিনাল বিল্ডিংয়ের সম্প্রসারণ ও রানওয়ের ওভারলে বা শক্তি বৃদ্ধির প্রকল্প ইতোমধ্যেই হাতে নেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালে বিভিন্ন এয়ারলাইন্স কর্তৃক মোট ১৬ লাখ ৯৩ হাজার যাত্রী এবং ৭৯১৮ টন কার্গো শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পরিবহন করা হয়েছে। ২০১৮ সালে যাত্রী সংখ্যা এবং মালামাল পরিবহন পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় যথাক্রমে ২ দশমিক ৮ শতাংশ ও ৭ দশমিক ৪ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।