সেন্ট্রাল অক্সিজেনের সেবা পাবে করোনা আইসোলেশন সেন্টারের রোগীরা

সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট সংযোজনসহ হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানোলার আওতায় আসলো নগরীর হালিশহরের প্রিন্স অফ চিটাগং কমিউনিটি সেন্টারে অবস্থিত করোনা আইসোলেশন সেন্টার চট্টগ্রাম।

করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ থাকা রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিতে বেসরকারি পর্যায়ে দেশের সর্বপ্রথম ১০০ শয্যার এ আইসোলেশন সেন্টারটিতে রোববার বিকেলে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্টের উদ্বোধন করা হয়েছে। এখন থেকে এখানে হাই ফ্লো ন্যসাল ক্যানোলা মেশিনের মাধ্যমে তীব্র উপসর্গে থাকা করোনা রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করা হবে।

রোববার (১৯ জুলাই) করোনা আইসোলেশন সেন্টার চট্টগ্রামে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট এবং হাই ফ্লো ন্যসাল ক্যানোলার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির।

এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. এএনএম মিনহাজুর রহমান, দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনের উপদেষ্টা সম্পাদক আয়ান শর্মা।

উদ্বোধনী অনু্ষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসার যে হাহাকার অবস্থা ছিল তা আমরা অতিক্রম করতে পেরেছি। বিভাগীয় ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সকল উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। করোনা আইসোলেশন সেন্টার চট্টগ্রাম যেভাবে করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে তাতে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগের হাত অনেক শক্তিশালী হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘চট্টগ্রামে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় এবং সক্ষমতা অর্জনে হালিশহরের করোনা আইসোলেশন সেন্টারটি বিশাল ভূমিকা রাখছে। চট্টগ্রামের করোনা রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে। এই আইসোলেশন সেন্টার থেকে গত ১ মাসে প্রচুর রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়াটা আমাদের আপনাদের সবার জন্য বিশাল অর্জন।

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. এএনএম মিনহাজুর রহমান বলেন, ‘এই আইসোলেশন সেন্টার থেকে কোন রোগীকে এখনো ফিরিয়ে দেয়া হয়নি। যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে করোনা আইসোলেশন সেন্টারটি প্রতিষ্ঠা হয়েছে তা অনেকটা পূর্ণ হয়েছে। এখানে বিনামূল্যে করোনা রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি দামি ওষুধ এবং খাবার বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে। আজ থেকে ম্যানিফোল্ড অক্সিজেন ডেলিভারি সিস্টেম নিয়ন্ত্রিত সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন চালু হওয়াতে হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যনোলা ছাড়াও প্রতিজন রোগীকেই ১৫ লিটার/ মিনিট অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করা যাবে। এছাড়াও গুরুতর রোগীদের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি হাইফ্লো ন্যাসাল ক্যানোলার মাধ্যমে প্রতি মিনিটে ৭০-৮০ লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন সরবরাহ করা যাবে।
সেন্ট্রাল অক্সিজেনের সেবা পাবে করোনা আইসোলেশন সেন্টারের রোগীরা 1
চট্টগ্রাম প্রতিদিনের উপদেষ্টা সম্পাদক ও প্রকাশক আয়ান শর্মা বলেন, ‘এ আইসোলেসন সেন্টার পরিচালনায় যারা জড়িত আছেন তারা সবাই তরুণ। সমাজের বিত্তশালী শ্রেণির মানুষ না হয়েও তারা চট্টগ্রামের মানুষের চিকিৎসা সেবায় যেভাবে এগিয়ে এসেছে তা চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রামবাসীর জন্য একটা সৌভাগ্য।’

করোনা আইসোলেসন সেন্টার চট্টগ্রামের প্রধান উদ্যোক্তা সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র অ্যডভোকেট জিনাত সোহানা চৌধুরীর সঞ্চালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন করোনা আইসোলেশন সেন্টার চট্টগ্রামের প্রধান সমন্বয়ক নুরুল আজিম রনি। প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের মধ্যে নাজিম উদ্দিন শিমুল, গোলাম ছামদানি জনি, জাওইদ চৌধুরী, নুরুজ্জামান, সাদ শাহরিয়ার উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকদের মধ্যে ডা. হাসিবুল হাছান, ডা. সাদ্দাম হোসেন, ডা. মো. আছাদুজ্জামান, ডা. তৃষিতা দত্ত, ডা. নাসরিন পারভীন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কামরুল হাসান চৌধুরী ( সুমন), মিজানুর রহমান মিজান, শাহাজাদা চৌধুরী, ঐশিক পাল জিতু, শিহাব চৌধুরী।

উল্লেখ্য, করোনা আইসোলেশন সেন্টার চট্টগ্রামে রোববার (১৯ জুলাই) দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ২৩০ জন করোনা আক্রান্ত ও করোনা উপসর্গে থাকা রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। বর্তমানে আরো ৪১ জন করোনা রোগী এই প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।

সিএম/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!