শোক দিবসেও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ধুলোর প্রলেপ, নজর নেই চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের

জাতীয় শোকের দিনে দেশের অন্যতম সর্ববৃহৎ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ‘বজ্রকণ্ঠ’ পড়ে আছে অবহেলায়। চট্টগ্রাম নগরীর পোর্ট কানেক্টিং রোডের বড়পোল মোড়ে অবস্থিত এই ভাস্কর্যে চোখ বুলালেই মনে হবে এ যেন বঙ্গবন্ধুর প্রতি লোক দেখানো ভালবাসা। রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা সংস্থা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এটি ভালোভাবে পরিষ্কারই করেনি।

মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবসে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে বঙ্গবন্ধুর যত প্রতিকৃতি, ম্যুরাল, ভাস্কর্য রয়েছে প্রত্যেকটিতে সম্মানসূচক পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দলীয় ও সামাজিক সংগঠন। একইভাবে নগরীর বড়পোল মোড়ে অবস্থিত ভাস্কর্যেও পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে দেখা গেছে। তবে ভাস্কর্যতে পড়েনি রং-তুলির আঁচড়।

মঙ্গলবার বড়পোল মোড়ে সরেজমিনে দেখা গেছে, ভাস্কর্যের সারা গায়ে জমে আছে শেওলা। আশপাশের সবুজ গাছগুলো অগোছালো। ভাস্কর্যের আশপাশে তো টংসহ বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকান রয়েছেই। চারিদিক রিকশা, অটোরিকশার পার্কিংয়ে ঘেরা।

তবে বঙ্গবন্ধুর গায়ের শেওলার দাগে মাহসিন নামের এক রিকশাচালকের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সারা বছর অযত্নে পড়ে থাকলেও অন্তত শোকের দিনে পরিপাটি রাখা যেত। এই হলো বড় লোকদের বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালবাসা।’

জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৯ জুলাই চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ভাস্কর্যের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ৮৭ লাখ ৭০ হাজার টাকায় নির্মিত এই ভাস্কর্য রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও সিটি কর্পোরেশনের। কিন্তু সঠিক ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অযত্ন অবহেলায় রয়েছে বঙ্গবন্ধুর এই ভাস্কর্য।

এই বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।

অন্যদিকে সংস্থাটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল হাসেমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ চেষ্টা করা হলে তিনিও কল রিসিভ করেননি।

এই ‘বজ্রকণ্ঠ’ ভাস্কর্যটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের তৎকালীন পরিচালক শিল্পী শায়লা শারমিন এবং নাট্যব্যক্তিত্ব আহমেদ ইকবাল হায়দারের পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানে তৈরি করা হয়। ভাস্কর হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ভাষ্কর মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম এটির নকশা (মডেল) প্রণয়ন থেকে শুরু করে মূল ভাস্কর্য নির্মাণের সার্বিক কর্মকাণ্ড সম্পাদনা করেন। এই ভাস্কর্য তৈরিতে সহযোগী শিল্পী হিসেবে ছিলেন জয়াশীষ আচার্য্য, তপন ঘোষ ও মোহাম্মদ পারভেজ আলম, বিলাস মন্ডল, নুর-এ-আলা সিদ্দিক, গোপাল কৃষ্ণ রুদ্র, মোস্তাফিজুর রহমান তোহা, জয়দীপ দেওয়ানজী।

আরএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!