চারদিকে সবুজ আর সবুজ। মাচানের কোনোটিতে ঝুলছে ঝিঙে, কোনোটিতে লাউ কিংবা তিতা করলা। ঢেঁড়স, পেপে, পুদিনার দেখাও মিলছে এই সবজি ক্ষেতে। একপ্রান্তে বরবটি ঝুলে আছে তো অন্যপ্রান্তে ঝুলছে বেগুন। বাদ নেই লাল শাক আর মিষ্টি কুমড়াও। বাঁশ কেটে তৈরি করা হয়েছে বেড়া। মাচানও তৈরি পরিপাটি করে।
না, এ কোনো গ্রামীণ কৃষকের গল্প নয়। ধনী কোনো পরিবারের অবসর বিলাসও নয়। চট্টগ্রাম শহরের বুকেই নিপুণ হাতে গড়া এই সবজি ক্ষেতের গল্পটি পুলিশের। আরও স্পষ্ট করে বললে, সমৃদ্ধ এই সবজি ক্ষেত গড়ে উঠেছে মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের হাতে। অবসরের সময়টুকু কাজে লাগিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানা প্রাঙ্গণেই নিজেদের হাতে ২৫ রকমের সবজি চাষ করেছেন থানায় কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিনের উদ্যোগে থানার আশপাশের খালি জায়গায় বিভিন্ন জাতের সবজির এ বাগান নজর কেড়েছে স্থানীয়দেরও।
থানার পরিত্যক্ত ৪ থেকে ৫ কাঠা জমিতে এই সবজির বাগান করা হয়েছে। এ বাগানে রয়েছে লাউ, মিষ্টি কুমড়া, বেগুন, বরবটি, শসা, ঝিঙে, চাল কুমড়া, ঢেঁরস, পেপে, লালশাক, পুঁইশাক, হলুদ, আদা, লেবু, পুদিনাসহ প্রায় ২৫ রকমের সবজি। এছাড়া থানা ভবনের চারপাশে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন রকমের ফুল ও ফলের চারা।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘গত পাঁচ মাস ধরে থানার পরিত্যক্ত জমিতে থানার পুলিশ সদস্যরাই সবজি বাগানটি করেছেন। এদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এটি হয়েছে। সবজি বাগান করার পর থেকে আমাদের থানার মেসে কোন ধরনের সবজি কিনতে হয় না। তাজা সবজি বাগান থেকে তুলেই খাওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি থানার আশপাশে থাকা কল্পলোক আবাসিক এলাকার সবাইকে অনুরোধ করেছি যেন বাড়ির পরিত্যক্ত জমি বা ছাদের উপর সবজি বাগান করেন। যাতে সবাই নিজেদের বাগান থেকে তাজা শাকসবজি খেতে পারে।’
এএইচ/এমএফও/সিপি