রেল পূর্বাঞ্চলে ৭০৯৯ পদই খালি, লোকবল সঙ্কট কাটছেই না

রেল পূর্বাঞ্চলে লোকবল সংকট কাটছেই না। পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় নিয়মিত কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শুধু পূর্বাঞ্চলেই ঘাটতি রয়েছে ৭ হাজার ৯৯ জনের। এই বিশাল শূন্যতার বিপরীতে সম্প্রতি ২৪৫ জন সহকারী স্টেশন মাস্টার নিতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে রেলওয়ে।

তবে এই ২৪৫ জনও কবে নিয়োগ পাবে তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। ফলে বাধ্য হয়ে দপ্তরগুলো টিএলআর (অস্থায়ী) শ্রমিক নিয়োগ করে জোড়াতালি দিয়ে চালানো হচ্ছে প্রশাসনিক কাজ।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক (পাহাড়তলী) কার্যালয় ও বিভাগীয় প্রকৌশলী (১) দপ্তরে খোঁজ নিয়ে জনবল সংকটের সকরুণ চিত্র ফুটে ওঠে। বিভাগীয় বাণিজ্যিক দপ্তর, কারখানা, ডিজেল ওয়ার্কসপেও লোকবল সংকটের একই অবস্থা বিরাজমান।

জানা যায়, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে মোট জনবল রয়েছে ১২ হাজার ৫৫৯ জন। কিন্তু থাকার কথা ১৯ হাজার ৬৫৮ জন। ঘাটতি ৭ হাজার ৯৯ জন। অপরদিকে পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল মিলে নূন্যতম লোকবল প্রয়োজন প্রায় ৪০হাজার।

এক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, পূর্বাঞ্চলে উর্ধতন কর্মকর্তা পদে মঞ্জুরিকৃত পদ সংখ্যা ১১টি। কিন্তু বিপরীতে কর্মরত আছেন ৫ জন। প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার মঞ্জুরিকৃত পদ ২৩৪টি, কর্মরত ১৭০ জন, ঘাটতি ৬৪জন। দ্বিতীয় শ্রেণির মঞ্জুরিকৃত পদ ৭১৬টি, কর্মরত ৩৯৬ জন, ঘাটতি ৩২০জন। তৃতীয় শ্রেণীর মঞ্জুরিকৃত পদ ১০ হাজার ৫১০টি, কর্মরত ৫ হাজার ৯৭৩ জন, ঘাটতি ৪ হাজার ৫৩৮জন। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর মঞ্জুরিকৃত পদ ৮ হাজার ১৮৭টি, কর্মরত ৬ হাজার ১৫ জন, ঘাটতি ২ হাজার ১৭২ জন।

অর্থাৎ ১৯ হাজার ৬৫৮টি পদের বিপরীতে ৭ হাজার ৯৯টি পদ শুন্য। অপরদিকে বিভাগীয় সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক দপ্তরে এ শুন্যতার চিত্র আরও ভয়াবহ। রেলে দ্বিতীয় কোনো দপ্তর খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে কর্মরতের চেয়ে শূন্যপদের সংখ্যা বেশি। বিভাগীয় সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক দপ্তরটি অজ্ঞাত কারণে অবহেলিত। এ দপ্তরে মোট মঞ্জুরিকৃত পদ ৬৮৭টি, কর্মরত রয়েছেন ৩২৬জন। শূন্যপদের সংখ্যা ৩৬১টি।

নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, স্টকিং ওয়ার্ডে লোকবল সংকট প্রকট আকার ধারণ করায় মহাপরিচালককে চুক্তি ভিত্তিক লোকবল নিয়োগদানের জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয়নি।

স্টকিং ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক (পূর্ব) ফরিদ আহমেদ বলেন, সমস্যা সমাধান উর্ধতনদের জানানো হলে মাসখানেকের মধ্যে সমাধানের আশ্বাস দেন। না হয় বাজেট দিলে অস্থায়ী লোকবল নিয়োগ দিয়ে কাজ চালিয়ে নিতে হবে।

বিভাগীয় প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক (পূর্ব) রুহুল কাদের আজাদ বলেন, জনবলের এতটাই সংকট যে, দৈনন্দিন কাজের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। বিষয়টি প্রতিটি মিটিংয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নজরে এনেছি। আশা করছি দ্রত সমস্যার সমাধান হবে।

কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!