মিরসরাইয়ে বিএনপি-আওয়ামী লীগ সংঘর্ষে পুকুরে পড়ে কিশোর নিহত, আহত ২০

দুই দলের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এক কিশোর নিহত হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে দুই দলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার আজমপুর বাজার এলাকায় সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটে।

মিরসরাইয়ের ওসমানপুর ইউনিয়নের আজমপুর বাজারে দুই দলের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে জাহেদ হোসেন রুমন (১৬) নামে ওই কিশোর পুকুরে পড়ে গিয়ে নিহত হয়। তার বাড়িও ওসমানপুর ইউনিয়নেই। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই দলই রুমনকে তাদের সমর্থক বলে দাবি করেছে।

জানা গেছে, সংঘর্ষের এক পর্যায়ে স্থানীয়রা পাশের একটি পুকুরে কিশোর রুমনকে দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে মস্তাননগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ জানিয়েছে, রুমন মৃগী রোগে আক্রান্ত ছিল। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় ভয় পেয়ে পুকুরে ঝাঁপ দেয়।’

জানা গেছে, আগামী ৫ অক্টোবর বিএনপির ১৫ দিনের কর্মসূচির মধ্যে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে রোডমার্চ উপলক্ষে মিরসরাইয়ে একটি পথসভা করার কথা রয়েছে। তারই প্রস্তুতি হিসেবে শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম উত্তরজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান উপজেলার ৫ নম্বর ওচমানপুর ইউনিয়ন এলাকায় একটি সভার প্রস্তুতি নিচ্ছেলেন। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের লোকজন তাদের ওপর হামলা করে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। এতে তাদের ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হওয়ারও দাবি করে বিএনপি।

তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের দাবি শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে স্থানীয় ওচমানপুর ইউনিয়ন এলাকার আজমপুর বাজারে বিএনপির লোকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় ওচমানপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ হাসান, মিরাজ, আরেফিন ও রাফিসহ ৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।

মিরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শাহিনুল ইসলাম স্বপন দাবি করেন, আগামী ৫ অক্টোবর তারিখের কর্মসূচির প্রস্তুতি হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তরজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি প্রস্তুতি সভার আয়োজন করে।

এসময় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হন। অবশ্য স্বপন এও স্বীকার করেন পরক্ষণে বিএনপির ক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরাও ছাত্রলীগের ওপর হামলা চালায়।

অপরদিকে ওচমানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শাহ্ আলম বলেন, ‘বিএনপি নেতা নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের অনুসারীরা স্থানীয় আজমপুর বাজারে আমাদের ছাত্রলীগ নেতা হাসান ও তার কয়েকজন সহযোদ্ধার ওপর হামলা চালায়। এতে ৫ জন আহত হয়।

বিএনপির অভিযোগ সম্পর্কে শাহ্ আলম বলেন, ‘এটা ডাহা মিথ্যা। তারা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।’

উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মাসুদ করিম রানা দাবি করেছেন, আজমপুর বাজারে বিএনপির লোকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় ওচমানপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহবায়ক মোহাম্মদ হাসান, মিরাজ, আরেফিন ও রাফিসহ ৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এছাড়াও জাহেদ হোসেন রুমন (১৬) নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী মারা গেছেন।

তবে মিরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাঈদ চৌধুরী রুমনকে বিএনপির সমর্থক দাবি করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের লোকজনই তাকে পুকুরে ডুবিয়েছে।’

জোরারগঞ্জ থানার ওসি মো. জাহিদ হোসেন সন্ধ্যায় জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ গেছে। পরবর্তীতে বিস্তারিত জানাতে পারবো।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!