৫ মাসে ৪ কাজ করতেই হবে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগকে

নৌকার বিদ্রোহীরা পদ পাবেন না দলে

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পরিবেশ তৈরি করতে ৫ মাসব্যাপী ৪টি কর্মসূচি বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ইউনিট ও নগরের কমিটি করার সময় বিভিন্ন জায়গায় দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে দলীয় মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে, বিশেষ করে দলের প্রতীক নৌকা যারা পেয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন করা প্রার্থীদের বাদ দেওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।

সোমবার (২১ জুন) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে নগর আওয়ামী লীগের সাথে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মতবিনিময় সভা শেষে এসব সিদ্ধান্তের কথা গণমাধ্যমকে জানান দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।

ডিসেম্বরে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন আয়োজনের লক্ষ্য সামনে রেখে মতবিনিময় সভায় জুলাই মাসে দলটির সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি, আগস্টে শোক দিবসের কর্মসূচি পালন ও সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ওয়ার্ড পর্যায়ের সম্মেলন করে নভেম্বরে থানা ইউনিটগুলোর সম্মেলন করার নির্দেশনা দেন হানিফ। তবে এক্ষেত্রে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়েও জোর দেন তিনি।

মতবিনিময় সভায় জুলাই মাসে নগরে আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত হয়। এই বিষয়ে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘দলে যোগদানের বিষয়ে অনেকের কথা এসেছে। এদেশে লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী আওয়ামী লীগের আছে। সে হিসেবে দলে যোগদান করানোর খুব বেশি প্রয়োজন নেই। তারপরও যদি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতি আস্থাশীল হয়ে, শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারায় সামিল হতে কোনো ব্যক্তি বা নেতা আসতে চায় সেক্ষেত্রে যার বিরুদ্ধে কোনো অনৈতিকতার অভিযোগ নেই, যার সঙ্গে যুদ্ধাপরাধীদের কোনো অভিযোগ বা সম্পৃক্ততা নেই, শিক্ষিত, সজ্জন, সমাজে এরকম গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের কেন্দ্রের অনুমোদন নিয়ে যোগদান করানো যেতে পারে। একজনের ইচ্ছে হল কাউকে এনে যোগদান করালাম সেটার কোনো সুযোগ নেই।’

জুলাইয়ে সদস্য সংগ্রহ শেষে আগস্টে শুধুই শোক দিবসের কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে। এর পর সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ওয়ার্ড পর্যায় ও নভেম্বর মাসে থানা ইউনিটের সম্মেলন সম্পন্ন করার নির্দেশনা দিয়ে এসব কমিটি করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন নির্বাচনে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীদের রাখা যাবেনা মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে দলীয় মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে, বিশেষ করে দলের প্রতীক নৌকা যারা পেয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে যারা সরাসরি নির্বাচন করেছে তাদের কোনো পদে রাখা যাবে না। কমিটিগুলো যখন হবে এটাকে মাথায় রাখবেন।’

এছাড়া সদস্য সংগ্রহ, ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলন আয়োজন, দলে নতুন সদস্য করার ক্ষেত্রে বিবেচ্য এবং কমিটি গঠনে নবীন-প্রবীণের সমন্বয় ঘটানোর নির্দেশনা দিয়ে হানিফ বলেন, ‘সম্মেলন করার সময় আরেকটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে। আমাদের যারা বয়োজ্যেষ্ঠ হয়ে গেছেন, শারীরিক সক্ষমতা কম, চলাচলের অসুবিধা হয়, এরকম শ্রদ্ধেয় নেতানেত্রীদের হয়ত আমরা আরেকটু উপরের দিকে নিয়ে যেতে পারি এবং ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ সহযোগী সংগঠন করে, যাদের বয়স ইতিমধ্যে ৪০-৫০ পার হয়ে গেছে, তাদেরকে দলের মধ্যে নতুন নেতৃত্বে আনতে পারি।’

এসব সফলভাবে শেষ হলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে আলোচনা করে সিগন্যাল পেলে ডিসেম্বরে নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন আয়োজন করা হতে পারে বলেও এসময় জানান হানিফ।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঞ্চালনায় চট্টগ্রাম সভায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুইপ আবু সাঈদ মাহমুদ আল স্বপন, শফিউল আলম নাদের, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহীবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

এআরটি/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!