মধ্যরাতের গুজবে চট্টগ্রামের মুনিরনগরে তিল হল তাল, এলাকাবাসীই অবাক

হিন্দুপাড়ায় ‘হামলা চেষ্টা’র গুজব

মধ্যরাতে হঠাৎই ফেসবুকে উত্তাপ ছড়াল একটি খবর— চট্টগ্রাম নগরীর ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচুর মারামারি হচ্ছে, মন্দির ভাঙচুর হচ্ছে ধোপাপাড়ায়।’ পোস্ট থেকে পোস্টে, গ্রুপ থেকে গ্রুপে সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্ক শুধু ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডেই নয়, ছড়ালো অন্য এলাকায়ও। কিন্তু মধ্যরাতে ঘটনাস্থল ঘুরে চট্টগ্রাম প্রতিদিনের সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেল, ভাইরাল সেই খবর প্রকৃতপক্ষে ছিল গুজব। এলাকার বাসিন্দারা হতবাক হয়েছেন এমন গুজবে।

চট্টগ্রাম নগরীর ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের ধোপাপাড়ায় ‘হামলা চেষ্টার’ যে তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে সেটিকে গুজব বলে নিশ্চিত করেছেন ধোপাপাড়ার বাসিন্দারা। ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের মুনিরনগরেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানেও মারামারির কোনো ঘটনা ঘটেনি।

রোববার (১৭ অক্টোবর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থলে যাওয়া চট্টগ্রাম প্রতিদিনের এই প্রতিবেদককে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা।

ধোপাপাড়া সুন্দরপাড়া শ্রী শ্রী রাধাগোবিন্দ ও লোকনাথ বাবা সেবা মন্দির। রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে তোলা ছবি।
ধোপাপাড়া সুন্দরপাড়া শ্রী শ্রী রাধাগোবিন্দ ও লোকনাথ বাবা সেবা মন্দির। রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে তোলা ছবি।

জানা গেছে, মানসিক ভারসাম্যহীন এক মধ্যবয়সী নারীকে দেখে স্থানীয় যুবকদের হাঁকডাকের জের ধরে এই গুজবের সূত্রপাত।

ধোপাপাড়ার বাসিন্দা মানিক নাথ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে দূর থেকে দেখে আমাদের পাড়ার কয়েকজন ধর ধর করে চিৎকার শুরু করলে অনেকে ঘর থেকে বের হয়ে আসে। এতে শোরগোল পড়ে গেলে আমাদের পাড়ার এক মেয়ে আতংকিত হয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়। অথচ সে ঘর থেকে বেরও হয়নি। বাইরে শোরগোল শুনেই ফেসবুকে পোস্ট করে দিয়েছে।’

তিনি নিশ্চিত করে জানান, ‘এখানে কোন কিছুই ঘটেনি। সব স্বাভাবিক আছে।’

রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ধোপাপাড়া সুন্দরপাড়া শ্রী শ্রী রাধাগোবিন্দ ও লোকনাথ বাবা সেবা মন্দিরের সামনে সরেজমিনে গিয়ে পুলিশের দুটি টহল গাড়ি দেখা যায়। এ সময় স্থানীয় হিন্দু যুবকদের একটি জটলাও ছিল সেখানে।

সেখানে থাকা চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি পলিটেকনিক্যাল কলেজের অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী জয়ও চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে একই তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের পাড়ার এক মেয়ে না বুঝে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে দেয়।’

ঘটনাস্থলে থাকা চট্টগ্রাম বন্দর থানা পুলিশের উপ পরিদর্শক হাসান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এক মানসিক ভারসাম্যহীম মধ্যবয়সী নারীকে দেখে স্থানীয় কয়েকজন ধর ধর করে চিৎকার চেচামেচি শুরু করলে পাড়ায় একটা আতংক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সাথে সাথেই আমরা ঘটনাস্থলে আসি। এখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!