বৈদ্যুতিক খুঁটির ছড়াছড়ি ইপিজেড-পতেঙ্গার সড়কে, পথচারীর মৃত্যুঝুঁকি

চট্টগ্রাম নগরীর অসহনীয় যানজট নিরসনে লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত নির্মিত হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেস। ইপিজেড পতেঙ্গা এলাকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসের কাজ চলছে সড়কের একটি বড় অংশ ঘেরাও করে। ফলে সড়কটি গিয়ে ঠেকেছে ৮ থেকে ১০ ফুটে। তার ওপর সড়কের মাঝখানের বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো সরানো না গেলে যে কোনো সময় ঘটে যেতে পারে প্রাণহানির মত বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সিমেন্ট ক্রসিং, নারিকেল তলা, স্টিল মিলস বাজার, জিইএম গেইট ও কাটগড় বাজার এলাকায় সড়কের মাঝখানে রয়েছে একাধিক বৈদ্যুতিক খুঁটি। প্রত্যেকটি বৈদ্যুতিক খুঁটিই খুবই বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। এ জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স, হালিশহর ও নিউমুরিং বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করছেন এলাকাবাসী।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় ইপিজেড পতেঙ্গা এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সড়কের ওপর থাকা বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো সরানোর বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের কোনো আগ্রহই নেই। অথচ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ভিআইপি সড়কের সিমেন্ট ক্রসিং থেকে শুরু করে কাটগড় বাজার পর্যন্ত সড়ক ঘেরাও করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসের কাজ চলছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসের চলমান প্রকল্পের কারণে বর্তমান সড়কটি গিয়ে ঠেকেছে ৮ থেকে ১০ ফুটে। সংকীর্ণ এই সড়কের মাঝখানে থাকা বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো আরেক বিপত্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এখানকার ফুটপাতও হকারদের দখলে। ফলে দীর্ঘ যানজটের পাশাপাশি বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনার আশঙ্কা। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দিয়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলাচল করে ভারি যানবাহন কাভার্ডভ্যান, লরিসহ বাস, ট্রাক, টমটম ও রিকশা।

মো. আব্দুল খালেক নামের এক পথচারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সের কাজ একেবারে অপরিকল্পিত। সড়কের একপাশ মেরামত করলেও অন্য পাশের কোনো খবর নেই। সড়কজুড়ে ভাঙ্গা ও বড় বড় গর্তের কারণে মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। ধুলোর রাজ্যে পরিণত হয়েছে পতেঙ্গা এলাকা। পতেঙ্গাবাসী ভাঙ্গা সড়ক ও যানজটসহ নানান কারণে অসহনীয় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। সড়ক থেকে বৈদ্যুতিক খুঁটি অপসারণ করা না হলে দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে। কোথাও কোথাও বেশ কয়েকটি বৈদ্যুতিক খুঁটি হেলে পড়েছে বলে জানান তিনি।

বাসচালক মো. রশিদ মিয়া বলেন, একদিকে সড়কের আয়তন কম। অন্যদিকে রয়েছে সড়কের মাঝখানে বৈদ্যুতিক খুঁটি। ব্যস্ততম এই পতেঙ্গায় রয়েছে স্কুল, কলেজ, গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন ডিপো। বিশেষ করে ইপিজেড-পতেঙ্গা এলাকায় ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়।

হালিশহর ও নিউমুরিং বিদ্যুৎ বিতরণ ও বিক্রয় বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. গিয়াস উদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, জনস্বার্থে যে কোনো দুঘর্টনা এড়াতে ইপিজেড-পতেঙ্গা এলাকায় সড়কের মাঝখানে থাকা বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলোর অপসারণ করা খুবই জরুরি। কিন্তু এলিভেটেড এক্সপ্রেসের চলমান কার্যক্রমে অতীতের তুলনায় সড়ক আরও প্রশস্ততার কারণে বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো এখন সড়কের মাঝখানে চলে গেছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেস প্রকল্পে অতীতে বিদ্যুতের বিষয়ে সিডিএ’র ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত না করায় আমরা বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলোর সরাতে পারছি না। তবে বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো সরানো কিংবা বিদ্যুতের কথা মাথায় রেখে সিডিএ’র ডিপিপি এখন প্রক্রিয়াধীন। বরাদ্দ পেলে আমরা খুব দ্রুত বৈদ্যুতিক খুঁটি সরানোর ব্যবস্থা নেবো। তবে এক বছরের আগে এ সমস্যার সমাধান হবে না বলে জানান তিনি।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!