বাফুফের বিরুদ্ধে বড় ধরণের দুর্নীতির অভিযোগ

গত তিন বছরে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ১৭ কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ অর্থবছরে কোন বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ছাড়াই অনিয়মতান্ত্রিকভাবে আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনসহ মোট ১৭ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ করেছেন খোদ ফেডারেশনের এক সহ-সভাপতি। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এই অনিয়মের ব্যাখ্যা চেয়ে বাফুফের সভাপতির কাছে চিঠি দিয়েছেন বাফুফের সহ-সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ মহি।

বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দীন বরাবর লেখা এই চিঠিতে গত তিন আর্থিক বছরের পুরো দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেছেন তিনি। কোন খাতে কী অনিয়ম হয়েছে তার পুরো বিবরণী লিখিত আকারে জমা দিয়েছেন ফেডারেশনের এই সংগঠক। শুধু তাই নয় ভাউচারের পরিবর্তে সাদা কাগজে বিল লেখার মতো অনৈতিক বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন তিনি। সঙ্গে এজিএমে বাজেট অনুমোদন ছাড়াই আর্থিক ব্যয় করার যৌক্তিকতা সভাপতির কাছে জানতে চেয়েছেন মহি।

তিন বছরের ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ থেকে মহির লিখিত অভিযোগে উঠে এসেছে দুর্নীতি-অনিয়মের চিত্র। ২০১৬ সালে ৮ কোটি ৬১ লক্ষ, ২০১৭ সালে ৫ কোটি ৬৫ লক্ষ ও ২০১৮ সালে ২ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকাসহ সর্বমোট ১৭ কোটি টাকার হেরফের হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। এর মধ্যেই বাফুফের কম্পিটিশন কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মহিউদ্দীন আহমেদ।

এই তিন অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে উল্লেখ করে মহিউদ্দীন মহি জানান, ‘আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণে এই অনিয়ম পেয়েছি। এই ১৭ কোটি দুর্নীতির পেছনে যে দায়ী সেটা নিয়ে তদন্ত করতে হবে। তাকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আমি নিজেও যদি কোন অনিয়ম করে থাকি তাহলে আমাকেও এর আওতায় নেয়া হোক।

গত তিন বছরে এজিএম ছাড়াই বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন দেয়াকে অবৈধ উল্লেখ করে মহি জানান, ‘এজিএমে পাস ছাড়াই কোনভাবে বার্ষিক প্রতিবেদন সাবমিট করার কোন সুযোগ নেই। এটা বাফুফে কীভাবে করে আসছে সেটাও জানতে চেয়েছি। এমনকি তিন বছরের তিনটি আর্থিক প্রতিবেদন তিনটি ভিন্ন অডিট ফার্ম দিয়ে করানো হয়েছে যার দুটি বাফুফের সাধারণ সভায় অনুমোদিত নয়। এজিএমে অনুমোদিত না হলে সেই অডিট ফার্মকে দিয়ে অডিট করানো অবৈধ।’ এই তিন অর্থবছরের ‘অবৈধ আর্থিক প্রতিবেদনেই’ ফুটবলের মাদার সংগঠন ফিফা ও এএফসির কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানান মহি। এবং যৌক্তিক ব্যাখ্যা না পেলে এএফসি ও ফিফা বরাবর চিঠি পাঠাতে পারেন বলে জানান তিনি।

এদিকে অনিয়মের এই অভিযোগ অস্বীকার করেন বাফুফের অর্থ কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুর্শেদী, ‘গত সাড়ে তিন বছরের যে অডিট হয়েছে, ফিফা ও এএফসিতে যা পাঠানো হয়েছে সঠিক উপায়েও হয়েছে। অভ্যন্তরীণ ও বহির্ভাগে যে অডিট হয়েছে সেটা নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। হয়তো সময়মত আমরা এজিএম করতে পারিনি। আমার কলিগের প্রশ্ন হয়তো সেটি হতে পারে।’ একই অর্থ কমিটির সদস্য মহিউদ্দীন মহির এমন অভিযোগ নিয়ে চেয়ারম্যানের বক্তব্য, ‘তিনি নিজেও এই কমিটির সদস্য। তার কোন যদি অভিযোগ থাকে তাহলে তিনি কিন্তু ওই কমিটিতেই সেটা দেখাতে পারতো।’

ফেডারেশনের কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা আনতে ও ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখতে সভাপতি কাজী সালাউদ্দীনের কাছে এই ১৭ কোটি টাকার অনিয়মের যথাযথ ব্যাখ্যা চেয়েছেন মহি। সঙ্গে বাফুফের পরবর্তী কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ করেছেন তিনি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!