প্রকল্প পরিচালক ছাড়াই ২৫০০ কোটি টাকার কাজ শুরু করল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন

প্রকল্প পরিচালক (পিডি) নিয়োগ না দিয়েই আড়াই হাজার কোটি টাকার বড় প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। প্রকল্পে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলীকে পিডি নিয়োগের আবেদন করা হলে তা নাকচ করে দেয় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। পরে এলজিইডির কোনো একজন প্রকৌশলীকে নিয়োগ দিতে চিঠি দেওয়া হয়। চিঠি দেওয়ার তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও পিডি নিয়োগ দেওয়া হয়নি। পিডি নিয়োগ না দিয়েই প্রকল্পের ৫০০ প্যাকেজের মধ্যে ১১টির দরপত্রে ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে।

জানা গেছে, চলতি বছরের ৪ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিটি কর্পোরেশনের আওতায় শাহ আমানত এয়ারপোর্ট রোড, বিভিন্ন সড়কসমূহ উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে প্রধান প্রকৌশলীকে রফিকুল ইসলামকে নিয়োগ দিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ১২ মে মন্ত্রণালয় জানায়, প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্ব প্রকল্পের কাজ তদারকি করা, তাই তাকে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ সমীচীন নয়। প্রধান প্রকৌশলী পরিবর্তে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে একজন উপযুক্ত প্রকৌশলীকে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে প্রেষণে নিয়োগ দিতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করে মন্ত্রণালয়।

কিন্তু ২০২২ সালের ১২ মে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করে তড়িঘড়ি করে মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়ে ওইদিনই দরপত্র প্রকাশ করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। এ দরপত্রের পরপরই প্রকল্প পরিচালক ছাড়াই ইতোমধ্যে দরপত্রের কাজও শুরু করা হয়েছে। দরপত্রের প্রায় ৫০০টি প্যাকেজে ব্যয় হবে আড়াই হাজার কোটি টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর। ইতোমধ্যে ওই প্রকল্পে ১১টি দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদারও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশল বিভাগের প্রধান রফিকুল ইসলাম প্রকল্পের কাজ তদারকিতে রয়েছেন। এজন্য ফায়দা লুটতে নিজেকে প্রকল্পের পিডি হিসেবে নিয়োগের জন্য কৌশলে প্রস্তাব পাঠান বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে আমি কী বলব? আমিতো মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিতে পারি না। বড় এ প্রকল্পের পিডি হিসেবে নিয়োগ দিতে আমার নাম প্রস্তবনা দিয়ে মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে কর্পোরেশন। এই বিষয়ে মেয়র মহোদয় ভাল জানবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে ১১টি প্যাকেজের দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদারও নিয়োগের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রায় ৫০০টি প্যাকেজের এ প্রকল্পের ব্যয় হবে আড়াই কোটি টাকা।’

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহীদুল আলম বলেন, ‘প্রকল্পটি আড়াই হাজার কোটি টাকার। প্রায় ১০ দিন আগে পিডি নিয়োগ চেয়ে মন্ত্রণালয়কে আরও একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর আগে প্রধান প্রকৌশলীকে পিডি হিসেবে নিয়োগ চেয়ে চিঠি দেওয়া হলেও মন্ত্রণালয় তা নাকচ করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ অফিসিয়ালি শুরু হয়েছে। প্রকল্পের মূল্যায়নের কাজ প্রক্রিয়াধীন।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!