পেঁয়াজ কম ক্রেতা বেশি, টিসিবি’র গাড়ি ঘিরে ঠেলাঠেলি

আকাশচুম্বী পেয়াঁজের ঝাঁজ সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে আনতে দূর-দুরান্ত থেকে আনা হলো পেঁয়াজ। চট্টগ্রাম নগরীতে সেই পেঁয়াজ ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)’র মাধ্যমে বিক্রি শুরু করে মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) থেকে।

কিন্তু দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে টিসিবি’র পেঁয়াজ কিনতে না পারায় ক্রেতা সাধারণের অভিযোগের খাতা প্রতিনিয়ত বড় হচ্ছে। সরবরাহ কম থাকা বা সঠিক সময়ে পেঁয়াজের গাড়ি না আসা, পেয়াঁজ বিক্রয়ে স্বজনপ্রীতি থেকে শুরু করে প্রভাব খাটিয়ে পেঁয়াজ কেনার অভিযোগও করছেন সাধারণ ক্রেতারা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী এলাকায় টিসিবি’র পেয়াঁজের গাড়িকে ঘিরে দীর্ঘলাইন সাধারণ ক্রেতাদের। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে কিনচ্ছেন ৪৫ টাকায় এক কেজি পেঁয়াজ।

লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা গৃহিনী গীতা রাণী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, গতকালও দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও পেঁয়াজ কিনতে পারিনি। খোলা বাজার থেকে পেঁয়াজ কেনা এখন সাধ্যের বাইরের। তাই আজকেও এসেছি পেঁয়াজ কিনতে।

কিন্তু সাধারণ মানুষের চাহিদা না মিটলেও টিসিবি’র এ পেঁয়াজ দিয়ে স্বজনপ্রীতি করতে দেখা যায় নগরীর কোতোয়ালী মোড়স্থ টিসিবি’র দায়িত্বপ্রাপ্ত মনিটরিং অফিসারকে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে কোতোয়ালী মোড়স্থ টিসিবি’র ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রে দেখা যায়, টিসিবি’র পেঁয়াজ বিক্রির ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে আয়েশি ভঙ্গিতে বসে আছেন এক ব্যক্তি। সাধারণ ক্রেতাদের এক কেজি করে পেঁয়াজ বিক্রির নির্দেশনা থাকলেও আয়েশি ভঙ্গিতে বসে থাকা ওই ব্যক্তির কাছে বিক্রি করা হয় বস্তা ভর্তি পেঁয়াজ।

তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে টিসিবি’র দায়িত্বপ্রাপ্তরা ব্যস্ততার অজুহাতে এড়িয়ে যান। এ সময় দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িতে থাকা সাধারণ ক্রেতারা অভিযোগ করেন, জনসাধারণের জন্য খোলা বাজারে টিসিবি’র পেঁয়াজ বিক্রিতে এভাবেই চলছে স্বজনপ্রীতি। অনেকে লাইনে না দাঁড়িয়ে প্রভাব খাটিয়ে পেঁয়াজ কিনছেন অনায়াসে।

পেঁয়াজ কম ক্রেতা বেশি, টিসিবি’র গাড়ি ঘিরে ঠেলাঠেলি 1
ছবি আজীম অনন

তবে খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রির বিষয়ে টিসিবি আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-উর্ধ্বতন কার্যনির্বাহী জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মঙ্গলবারের মত আজও নগরীর ৬টি পয়েন্টে টিসিবি’র পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। তবে প্রতি ট্রাকে ৬৫ কেজি বাড়িয়ে আজ ১ হাজার ৬৫ কেজি পেঁয়াজ প্রতি ট্রাকে রয়েছে।
কী পরিমাণ পেঁয়াজ টিসিবি’র কাছে মজুদ আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পেঁয়াজের মজুদের পরিমাণ এই মুহূর্তে বলা যাবে না। পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য তাই একদিনে কিনে একদিনেই বিক্রি করছি।

তবে চট্টগ্রাম মহানগরী এবং বিভাগীয় পর্যায়ে দৈনিক কী পরিমাণ পেঁয়াজের চাহিদা আছে জানতে চাইলে এ বিষয়ে জানা নেই বলে জানান তিনি।
তার সাথে মুঠোফোনে কথোপকথনের এক পর্যায়ে টিসিবি’র পেঁয়াজ বিক্রির অনিয়মের প্রসঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি অফিস থেকে একটা জরুরি কল এসেছে অজুহাতে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরবর্তীতে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি আর কল রিসিভ করেন নি।

এএ/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!