টেকনাফে পুলিশ ও বিজিবির সাথে পৃথক বন্দুকযুদ্ধে রোহিঙ্গা নারীসহ নিহত ৩

কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)র সঙ্গে পৃথক বন্দুকযুদ্ধে রোহিঙ্গা নারী সহ ৩জন নিহত হয়েছেন। পুলিশ ও বিজিবির দাবি তারা ইয়াবা ব্যবাসয়ী। ৩১ মার্চ ভোর রাতে হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভী বাজার ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নের খারাংখালী নাফ নদীর তীরের এই ঘটনাস্থল থেকে ২০ হাজার ইয়াবা ছয়টি এলজি আঠার রাউন্ড কার্তূজ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত।

টেকনাফ থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ জানান, রাতের প্রথম প্রহরে উপজেলার হ্নীলা মৌলভী বাজার ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় ইয়াবা কারবারী দু’গ্রুপের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের খবর পেয়ে টেকনাফ মডেল থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায়। এসময় মাদক কারবারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে গুলিবর্ষণ করলে উভয়পক্ষের মধ্যে অর্ধ শতাধিক রাউন্ড গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশের এসআই দীপক, এএসআই আমির ও কনস্টেবল শরীফুল আহত হয়। মাদক কারবারীরা পিছু হঠলে ঘটনাস্থল তল্লাশি চালিয়ে ৬টি দেশীয় অস্ত্র, ১০ হাজার পিস ইয়াবা ও ১৮টি তাজা কার্তুজসহ রক্তাক্ত ও গুলিবিদ্ধ দুইজনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য টেকনাফ উপজেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজারেও নেওয়া হয়।

সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় দু’জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের উপজেলার হ্নীলা আলী আকবর পাড়ার মিয়া হোছনের পুত্র মাহমুদুর রহমান (২৮) ও হ্নীলা পশ্চিম সিকদার পাড়া মইন্যাজুমের নুররুল ইসলামের পুত্র মোহাম্মদ আবছার (২৫) বলে সনাক্ত করা হয়। আবছার দীর্ঘ দিন ধরে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চেকপোষ্ট এলাকা শ্বশুড়বাড়ী থেকে ইয়াবা ব্যবসার লেনদেন করে আসছিল বলে জানায় পুলিশ। নিহতদের বিরুদ্ধে মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে। পলাতক থাকায় পুলিশ তাদের খুঁজছিল। মৃতদেহ মর্গে পোস্টমর্টেম করা হচ্ছে বলেও ওসি জানান। এ বিষয়ে মামলার করা হয়েছে।

অপরদিকে ২ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর শরিফুল ইসলাম জোমাদ্দার জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ইয়াবার একটি বড় চালান এপারে প্রবেশ করবে, এ সংবাদে ভোররাত সাড়ে ৪ টারদিকে একটি বিশেষ টহল দল নাফনদীতে অবস্থান নেয়। কিছুক্ষণ পরে ওমরখাল পয়েন্ট দিয়ে নৌকাযোগে একদল রোহিঙ্গা ইয়াবার চালান নিয়ে অনুপ্রবেশকালীন সময় বিজিবি সদস্যরা চ্যালেঞ্জ করলে তারা বিজিবির উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে এবং ফাঁকাগুলিবর্ষণ করে। বিজিবিও আতœরক্ষার্থে গুলিবর্ষণ করে। চোরাকারবারীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থল হতে গুলিবিদ্ধ এক রোহিঙ্গা নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত মহিলার ভ্যানিটি ব্যাগ হতে ১০ হাজার ইয়াবা ও ঘটনাস্থল তল্লাশি করে করে ২টি ধারালো কিরিচ উদ্ধার করা হয়। ব্যাগে পাওয়া তার আইডি কার্ড হতে পরিচয় মিলে। তিনি মিয়ানমারের আকিয়াব জেলার মন্ডু থানার রাইম্যাবিলের বদরুল ইসলামের স্ত্রী রুমানা আক্তার (২০)। বর্তমানে লেদা অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা বস্তির ব্লক নং-সি/৬ এর ৪০নং কক্ষে বসবাস করে আসছে বলে জানায় বিজিবি।
এই ঘটনার খবর পেয়ে টেকনাফ মডেল থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর পর নিহত মহিলাকে মর্গে প্রেরণ করা হয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!