টাকার বিনিময়ে পেশায় জেলে নয়-এমন ব্যক্তিদের মাঝে চাল বিতরণের অভিযোগ

কক্সবাজারের উখিয়ায় টাকার বিনিময়ে জেলেদের মাঝে চাল বিতরণে অভিযোগ উঠেছে। অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে শতাধিক কার্ডধারী জেলে একত্রিত হয়ে ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

জানা গেছে, শনিবার (২৭ জুন) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার উপকূলীয় জালিয়াপালং ইউনিয়নের ২ হাজার ৭৫ জন জেলের মাঝে ৫৬ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। কিন্তু প্রকৃত জেলেদের বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে পেশায় জেলে নয় এমন ব্যক্তিদের মাঝে চাল বিতরণের অভিযোগ তুলেন অনেক জেলে।

মনখালী এলাকার মুজিবুল হক বলেন, স্থানীয় মহিলা মেম্বারের স্বামী আবুল বশর টাকার বিনিময়ে আসল কার্ডধারী জেলেদের বাদ দিয়ে টোকেন দিয়ে পেশায় জেলে নয় এমন ব্যক্তিদের চাল দিয়েছে। এর আগেও আমরা শতাধিক প্রকৃত জেলেদের সরকারি ভাতা দেওয়া হয়নি। চাল বিতরণেও অনিয়ম করায় জেলেরা আজ পরিষদে চত্বরে এসে বিক্ষোভ করছে।

একই অভিযোগ তুলেন মনখালী ৯নং ওয়ার্ডের আবুল কালাম। তিনি বলেন, প্রকৃত কার্ডধারী জেলেরা করোনা দুর্যোগে সরকারের কোন সহযোগিতা পাচ্ছে না।

একই এলাকার মৎস্যজীবী আলী আহমদ ও সাইফুল ইসলাম বলেন, এদিকে সাগরে মাছ ধরাও নিষেধ। তার উপর করোনার কারণে কর্মহীন হয়ে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছি। সরকারি সহায়তাও প্রকৃত জেলেরা পাচ্ছে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহিলা ইউপি সদস্যের স্বামী অভিযুক্ত আবুল বশর বলেন, অভিযোগের বিষয়টি সত্য নয়। কারণ ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মুছা বর্তমানে জেলে আছেন। তাছাড়া আমার স্ত্রী সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য হওয়ার সুবাদে চেয়ারম্যানের করা তালিকা অনুযায়ী লোকজনকে পরিষদের আসার জন্য বলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে জালিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর সরকারের পক্ষ দুই মাস সাগরে মাছ ধরা নিষেধ করা হয়। ওই সময় কর্মহীন জেলেদের ভাতা ও সহায়তা দেওয়া হয়। এবারও প্রকৃত জেলেদের ৫৬ কেজি করে চাল বিতরণের জন্য উখিয়া উপজেলা সমন্বয় সভায় তালিকা হালনাগাদ করা হয়। এতে আগের কার্ডধারী জেলে কিন্তু বর্তমানে পেশা পরিবর্তন করেছে এমন কিছু মানুষও বাদ পড়েছে। তারাই আজ বিক্ষোভ করেছে। তবে পর্যায়ক্রমে সবাই পাবে। ইউএনও মহোদয় বঞ্চিতদের তালিকা জমা দিতে বলেছেন। টাকার বিনিময়ে অনিয়ম করে টোকেনের মাধ্যমে চাল বিতরণের বিষয়টি সত্য নয় বলেও জানান তিনি।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পেশা পরিবর্তন করেছে এবং এমন কিছু স্বচ্ছল মানুষকে উপজেলার মাসিক সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কেউ কেউ তালিকা থেকে বাদ পড়ায় অসন্তোষের খবর পেয়েছি। তাদেরকেও সুবিধার আওতায় আনার বিষয়ে কথা হয়েছে। তবে টাকার বিনিময়ে অনিয়মের কোনও অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান ইউএনও।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!