টাইব্রেকারে নির্ধারণ হলো শিরোপা, চ্যাম্পিয়ন নির্বাণ

মহানগরী পাইওনিয়র ফুটবল লিগ

এক সময় মনে হচ্ছিল খেলা গোলশূন্য ড্র দিয়ে টাইব্রেকারে গড়াবে। কিন্তু আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণে ঠাসা খেলায় হঠাৎ রামপুর একাদশের ডি-বক্সের ভেতর বল পেয়ে যান নির্বাণের তাজুল ইসলাম অহি। ম্যাচের বয়স তখন ৫৮ মিনিট। ৭০ মিনিটের খেলায় বলা যায় অনেকটা অন্তিম মুহূর্ত। দ্বিতীয়ার্ধে ভালো খেলতে থাকা নির্বাণ গোল খেয়ে পরবর্তী চার-পাঁচ মিনিট খেয় হারিয়ে ফেলে। তবে খেলার শেষ বাঁশি বাজার ৫ মিনিট আগে থেকে আবারও পুরোদমে আক্রমণ শানাতে থাকে রামপুর একাদশের গোলবার লক্ষ্যে। রামপুরের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের দক্ষতা দেয়াল হয়ে দাঁড়ায় নির্বাণের সামনে। কিন্তু হঠাৎ করে রামপুরের দেয়ালে ফাঁটল দেখল নির্বাণ এবং তড়িৎ গতিতে প্রাপ্ত সুযোগটি কাজে লাগাল নির্বাণের তওহিদুল ইসলাম। ফলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকার নামক ভাগ্য পরীক্ষায়। আর ভাগ্যদেবী নির্বাণের দিকেই চোখ তুলে তাকায়। ৪-২ গোলে রামপুর একাদশকে পরাজিত করে চট্টগ্রাম মহানগরী ক্রীড়া সংস্থার ব্যবস্থাপনায় ইস্পাহানি পাইওনিয়র ফুটবল লিগের শিরোপা নিয়ে উল্লাসে মেতে উঠে নির্বাণের খেলোয়াড়-কর্মকর্তারা।

দামপাড়া পুলিশ লাইন্স মাঠে গত ৫ সেপ্টেম্বর ১৮টি দল নিয়ে মাঠে গড়িয়েছিল ইস্পাহানি মহানগরী পাইওনিয়র ফুটবল লিগের। দলগুলোকে চারগ্রুপে বিভক্ত করে চলে প্রথম পর্বের খেলা। প্রত্যেখ গ্রুপের সেরা দুই দল নিয়ে হয় কোয়ার্টার ফাইনাল। সেখান থেকে সেমির লড়াইয়ে জিতে ফাইনালের টিকিট পেয়েছিল রামপুরা একাদশ ও নির্বাণ। টাইব্রেকারে নির্বাণের পক্ষে তাজুল ইসলাম, মো. শাহরিয়ার ইসলাম, জুনায়েদ আলী, মিরহাজুল আনোয়ার গোল করতে সক্ষম হলেও মো. লোকমানের শটটি ঠেকিয়ে দেন রামপুরের গোলরক্ষক জুনাইদ হোসেন। তাতে তাদের খুব বেশি অসুবিধা হয়নি, কেননা ট্রাইবেকারে রামপুর একাদশের পক্ষে মো. হৃদয় ও শান্ত দাশ গোল করতে পারলেও তাদের নেয়া প্রথম দুই শট গোল পোস্টের বাইরে মারেন শুভ চৌধুরী ও মেহেদী হাসান বাপ্পি। নির্বাণের পাঁচ শটের মধ্যে চারটিতে গোল হওয়ায় রামপুর একাদশের পঞ্চম শটটি আর নেয়ার প্রয়োজন হয়নি।

ফাইনালে চমৎকার ফুটবল খেলেও টাইব্রেকার ভাগ্যে রানার্স আপ ট্রফি নিয়ে সন্ত্বোষ্ট থাকতে হয় রামপুর একাদশকে।
ফাইনালে চমৎকার ফুটবল খেলেও টাইব্রেকার ভাগ্যে রানার্স আপ ট্রফি নিয়ে সন্ত্বোষ্ট থাকতে হয় রামপুর একাদশকে।

বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দামপাড়া পুলিশ লাইন্স মাঠে খেলা শেষে বিকেলে পুরষ্কার বিতরণ করেন সিএমপি কমিশনার ও চট্টগ্রাম মহানগরী ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মো. মাহাবুবর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইস্পাহানি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মির্জা শাকির ইস্পাহানি, ইস্পাহানি গ্রুপের প্রধান নির্বাহী এন ইউ এম হুমায়ুন, গ্রুপের কর্পোরেট ম্যানেজার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ। পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান ও উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক। এ সময় সংস্থার সিনিয়র সহ-সভাপতি ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অর্থ ও প্রশাসন) আমেনা বেগম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মোস্তাক আহমেদ খান, উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) আমির জাফর, সংস্থার ক্রিকেট কমিটির ও চেয়ারম্যান উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান, সংস্থার সহ-সভাপতি ও উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক, উত্তর) মো. শহিদুল্লাহ, উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক, বন্দর) তারেক আহমেদ, উপ-পুলিশ কমিশনার (পাবলিক অর্ডার ম্যানেজম্যান্ট, উত্তর) হারুন-উর-রশীদ হাযারী, উপ-পুলিশ কমিশনার (কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট) হাসান মো. শওকত আলী, সহকারী পুলিশ কমিশনার (র্ফোস) আরিফ হোসেন এবং সিএমপির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ। অনুষ্ঠানে আগত কর্মকর্তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর শায়েস্তা খান।
ফাইনাল খেলা টাইব্রেকারে গড়ানোর পেছনের কারিগর নির্বাণের গোলরক্ষক আফাজ উদ্দিন। তার হাতে ম্যাচ সেরার পুরষ্কার তুলে দিচ্ছেন সিএমপি কমিশনার।
ফাইনাল খেলা টাইব্রেকারে গড়ানোর পেছনের কারিগর নির্বাণের গোলরক্ষক আফাজ উদ্দিন। তার হাতে ম্যাচ সেরার পুরষ্কার তুলে দিচ্ছেন সিএমপি কমিশনার।

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগরী ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ন-সম্পাদক সাহাব উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ফুটবল কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান তৈয়বুর রহমান, মিনহাজ উদ্দিন আহমেদ, ফরিদ আহমেদ, সংস্থার নির্বাহী কমিটির সদস্য মমতাজুল হক রুক্কু, কায়সার মির্জা, সেকান্তর কবির, ফুটবল কমিটির সম্পাদক শামীম আজাদ খোকন, ফুটবল কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নাসির মিয়া, এম এ মুসা বাবলু, রাকিব মাহমুদ, মাহবুবুল আলম ভূইয়া মুকুল, ফুটবল কমিটির সদস্য সাইদ আব্বাস, সাবেক ফিফা রেফারি মারুফ সিকদার, জহির উদ্দিন, লুতফুর কাদের বাবর, মো. মুছা।

চ্যাম্পিয়ন দল নির্বাণকে ট্রফিসহ ১২ হাজার ট্রফি এবং রার্নাস আপ দল রামপুর একাদশকে ট্রফিসহ ৮ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। এছাড়া লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা রামপুর একাদশের আরমান শাহ ও ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় নির্বাণের আফাজ উদ্দিনের হাতে অর্থ ও পুরষ্কার তুলে দেন অতিথিরা। লিগের সেরা সূ-শৃঙখল দল বিবেচিত হয় ফরিদ ফুটবল একাডেমি। অনুষ্ঠানে সেমি ও কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে যাওয়া আবর্তন গোষ্ঠী, চট্টগ্রাম ইডেন স্টার ক্লাব শিকলবাহা স্পোর্টস একাডেমি, কালারপোল ক্রীড়া সংস্থা, মোহরা ফুটবল একাডেমি, বাংলাদেশ বয়েজ ক্লাব ফুটবলকে অর্থ ও ট্রফি তুলে দেন অতিথিরা।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!