জামায়াতের সাবেক এমপি শামসুসহ ৬ নেতা কারাগারে

আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামে (আইআইইউসি) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ছয় জামায়াত নেতাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাঈল হোসেনের আদালত এই আদেশ দেন।

কারগারে যাওয়া ছয় জন হলেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর আ ন ম শামসুল ইসলাম, জামায়াতের চট্টগ্রাম মহানগর নায়েবে আমীর অধ্যাপক আহসান উল্লাহ ভূঁইয়া, জামায়াত নেতা অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, কাউসার আহমেদ, শফিউল আযম ও নিজাম উদ্দিন। তারা সকলেই আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক ও নীতিনির্ধারণী পদে দায়িত্ব পালন করছেন।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী সাহাবুদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদনকে বলেন, ‘সীতকুণ্ড থানায় দায়ের হওয়া মামলায় আ ন ম শামসুল ইসলাম, অধ্যাপক আহসান উল্লাহ ভূঁইয়াসহ ৬ ব্যক্তিকে আদালত কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুরসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। আসামীরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন। চট্টগ্রাম আদালতে আজ আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন করলে আদালত তা না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম জেলা আদালতের অতিরিক্ত পিপি ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক কামাল উদ্দীন বাদি হয়ে গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে সীতাকুণ্ড থানায় মামলাটি দায়ের করেছিলেন। ওই ঘটনায় সীতাকুণ্ড থানার পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়েরের অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। অনুমতি পেলে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার কার্যক্রমও চলবে বলে জানা গেছে।

মামলায় আইআইইউসির বোর্ড অব ট্রাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও জামায়াতের নায়েবে আমীর আ ন ম শামসুল ইসলাম, ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ, শিক্ষক মাহবুবুর রহমান, কাউছার আহমেদ, শফিউল আজম ও নিজাম উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে ৬০ থেকে ৭০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন মোল্লা বলেন, ‘রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতির প্রয়োজন হয়। মামলার এজাহারে অন্যান্য ধারায় অভিযোগ থাকায় আমরা নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করেছি। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হিসেবে গ্রহণ করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছি। সেখান থেকে নির্দেশনা আসলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

মামলার এজাহারে বাদি উল্লেখ করেন, গত ২৯ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুর করে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা। খবর পেয়ে তিনি দ্রুত ওই ক্যাম্পাসে গিয়ে ছবি ভাঙচুরের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তারা তাকে হত্যা করে লাশ গুমের হুমকি দেয়।

বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার কর্নেল (অব) মো. কাশেম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলা এবং বিচার প্রক্রিয়া স্বাভাবিকভাবেই চলবে। আদালতের বিষয়ে আমার কথা বলার সুযোগ নেই। তবে ঘটনার দিন কারা ওখানে গিয়েছে সেটা সিসি ক্যামরায় আছে। ছবি ভাংচুরের বিষয়ে আমাদের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটিতে উপস্থাপন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

এফএম/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!