চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিসা সেবা যেন দিনি দিন ব্যাহত হচ্ছে। জনবল সংকটের পাশাপাশি দায়িত্ব পালনে গাফেলতির অভিযোগ রয়েছে হাসপাতালের চিকিসা সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের। পাঁচশ শয্যার জনবল দিয়ে প্রায় এক হাজার তিনশ তের শয্যার এ হাসপাতালটির বিপরীতে বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারিসহ (আউটসোর্সিং) ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োজিত রয়েছেন মাত্র ৫৫৭ জন।
প্রতিদিন বৃহত্তর চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রায় তিন থেকে চার হাজার রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসে এ হাসপাতালে। হাসপাতালে সেবা নিতে এসে প্রতিনিয়ত নানা হয়রানীসহ দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে দূর-দুরান্ত থেকে আসা রোগীদের। জনবল সংকট নিরসনে নতুন করে নিয়োগ দিলে সমস্যা সমাধান এবং সেবার মানও বৃদ্ধি পাবে বলে জানান ভুক্তভোগী মোঃ আরিফ হোসেন।
চমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আখতারুল ইসলাম বলেন,জনবল সংকট থাকার কারণে ওয়ার্ডের কার্যক্রমও অনেকটাই ধীরগতিতে চলছে প্রতিনিয়ত বিভাগীয় প্রধান থেকে শুরু করে ওয়ার্ড ইনচার্জকেও একাধিক সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়।
হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, জরুরি বিভাগে আগে ৩০ জনের মত কর্মচারী থাকলেও বর্তমানে রয়েছে মাত্র দশ জন। এদের মধ্যে দুই জনকে সার্বক্ষণিক টিকেট কাউন্টারে বসতে হয়। বাকি আটজন রোগীদের বহনে কাজ করে থাকেন। আগের তুলনায় কম জনবল থাকায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রোগীরা। একাধিক রোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওয়ার্ডগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করে থাকেন না ওয়ার্ড সুইপাররা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকলেও নেয়ার মত নেই কোন লোক। বাধ্য হয়ে রোগীর স্বজনদের এসব কাজ করতে হচ্ছে। শুধু ওয়ার্ডে নয়। এমন চিত্র হাসপাতালের জরুরি বিভাগেও।
হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার জানিয়েছেন, জনবল সংকটের কারণে আমরা অনেক কাজ সুষ্ঠ ভাবে পরিচালনা করতে পারছি না। তবে দুই থেকে আড়াই’শ কর্মচারী নিয়োগ পেলে এ সমস্যার সমাধান হবে বলেও জানান ওয়ার্ড মাস্টার। আগে ১৫ জন কর্মচারি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করতো। বর্তমানে মাত্র ৫জন কর্মচারী রয়েছে। এর মধ্যে তিনজন আউটসোর্সিং বাকি দুই জন সরকারি। আউটসোর্সিংয়ের কর্মচারীরা নিয়মিত কাজ করলেও সরকারি যারা আছেন তারা কোন কাজেই করেন না।
হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহসেন উদ্দিন আহমদ বলেন, আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে জনবল নিয়োগ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় যদি অনুমতি দেয়, তাহলে এসব জনবল নিয়োগ দেয়া হবে।